‘‘বিনিময় হার বাজারমূখী করা প্রয়োজন। আমরা বলেছি তা করতে। আশা করছি ধীরে ধীরে চাপ কমে গিয়ে বিনিময় হারও স্থিতিশীল হবে”, বাংলাদেশ ব্যাংককে বলেছেন তিনি।
Published : 02 Nov 2023, 10:12 PM
ক্রমাগত বাড়তে থাকে মূল্যস্ফীতির পারদ ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে আশাবাদী পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। জানুয়ারিতে তা ৮ শতাংশে নেমে আসবে বলে মনে করেন তিনি, যা এখন ১০ ছুঁই ছুঁই।
অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক অংশীজনদের সঙ্গে যে সংলাপ শুরু করেছে, তার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসেন এই কৃষি অর্থনীতিবিদ। আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারকে বাজারমূখী করে আগামী মুদ্রানীতির কৌশলগুলো নির্ধারণ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরামর্শ নিতে বিভিন্ন ধারার অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে তারা।
বৈঠকে রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপ, বিনিময় হারকে স্থিতিশীল পর্যায়ে আনা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলো কি তা জানতে চান শামসুল আলম।
সরকার চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছিল, কিন্তু অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে প্রায় ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এই হার গত মার্চ থেকেই ৯ শতাংশের উপরে থাকছে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতি নিয়েছে তা রিভিউ করেছি। আমাদের মতামত চেয়েছে- আমরা দিয়েছি।’’
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক উদগ্রীব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তাতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। ধীরে ধীরে কমে আগামী জানুয়ারি মাসে তা ৮ শতাংশে নেমে আসবে মনে করছি।’’
ক্ষয় হতে থাকা রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন কিছু পদক্ষেপ নিতে চায় বলেও জানানো হয়েছে প্রতিমন্ত্রীকে।
শামসুল আলম বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় মনোযোগী হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নিতে চায় তারা। আমরাও সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছি।
‘‘বিনিময় হার বাজারমূখী করা প্রয়োজন। আমরা বলেছি তা করতে। আশা করছি ধীরে ধীরে চাপ কমে গিয়ে বিনিময় হারও স্থিতিশীল হবে।”
বৈঠকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘অর্থনীতিবিদ হিসেবে তার পরামর্শগুলো আমরা নিয়েছি। আমাদের পদক্ষেপগুলো জানিয়েছি। স্যার, আমাদের পদক্ষেপের সঙ্গে একমত হয়েছেন।’’
যেসব পরামর্শ উঠে আসছে, সেগুলো কবে বাস্তবায়ন হবে, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘নীতি পদক্ষেপগুলোর অনেকগুলোই বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রভাব দেখতে তো একটু সময় লাগবে। এক পর্যায়ে আশা করছি ধীরে ধীরে সব কিছু স্থিতিশীল হয়ে আসবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকে এসব বৈঠকে নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান ও ডেপুটি গভর্নররা।
প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও গভর্নর ছাড়াও ছিলেন মুদ্রানীতি তৈরির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা।