বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে দেখা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের (দ্য ফেড) ছয় সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল।
এটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন- এটি একটি ব্যাংক কল। ফেডের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হিসাব সংরক্ষণ করা আছে। যেখানে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে আমাদের লেনদেন করা হয়।”
ফেডের এই প্রতিনিধি দলে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সদস্য, রিলেশনশিপ ও হিসাব সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা ছিলেন বলে জানান মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, “তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন লেনদেনে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, কী করলে সেবা আরও ভালো করা যায়। আমরা যে ট্রানজেকশন (লেনদেন) করছি, এ বিষয়ে তাদের যে আন্ডারস্টান্ডিং (বোঝাপড়া) রয়েছে, তা আমাদের কাছে বলেছেন।”
গভর্নরের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মেজবাউল হক বলেন, “বৈশ্বিক অর্থনীতির চলমান অবস্থা নিয়ে গভর্নরের ধারণা কেমন? আমরা কীভাবে এগোচ্ছি? তা জানতে চেয়েছেন তারা। মূলত এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের হিসাবে জমা আছে। নগদ ও বিনিয়োগ আকারে এ অর্থ রাখা হয়েছে। এ হিসাবে থাকা অর্থ থেকেই ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি সুইফট সিস্টেমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করা হয় হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফটের সার্ভারে ম্যালওয়্যার পাঠিয়ে হ্যাক করে হ্যাকার দলটি।
ওই অর্থ ফিলিপাইনের স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোতে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।
রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখের মধ্যে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধারে ২০২০ সালে মামলা করে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই মামলা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।
বিশ্বজুড়ে আলোচিত ওই চুরির ঘটনায় সুইফট সিস্টেমের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এলেও ফেডের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি দল আসেনি।