১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ২০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে একনেকে।
Published : 29 Aug 2023, 08:18 PM
পদ্মা সেতুর সুফল নিতে দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীতে এবার রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার ‘পটুয়াখালী রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
৩০৬টি শিল্প প্লট নিয়ে ওই রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকাটি (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠা করা হবে কলাপাড়া উপজেলায়।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগ আহরণ, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার উদ্দেশ্যে প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে গৃহীত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা); খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে বেপজার নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে প্রায় ৩৩৮ কোটি টাকা, বাকি ১ হাজার ১০৫ কোটি টাকার জোগান দেওয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।
আগামী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
দেড়শ কোটি ডলার বিনিয়োগ পাওয়ার আশায় পটুয়াখালীতে ইপিজেড করার পরিকল্পনা
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এ প্রকল্পের জন্য ৪১৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে ৩০৬টি শিল্প প্লট তৈরি করা হবে। একইসঙ্গে প্রকল্পের আওতায় রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ করার পাশাপাশি চারটি ছয়তলা কারখানা ভবন, তিনটি ১০ তলা, চারটি ছয় তলা আবাসিক ভবন, একটি ৬ তলা ও দুটি ৪ তলা অফিস ভবন এবং দুটি অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হবে।
বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ১৪টি ১১/০.৪১৫ কেভি সাবস্টেশন, ১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি এইচটি লাইন ও একটি ৩৩/১১ কেভি জিআইএস সাবস্টেশন নির্মাণ ও একটি হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রায় ১৪ হাজার ৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ের ২০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১২ হাজার ৪০৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেব বিদেশি অর্থায়ন আসবে ১ হাজার ৪৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। এছাড়া সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ ৬১৯ কোটি টাকা।
অন্যান্য প্রকল্প
‘স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প। ব্যয় বাড়ছে ৪১৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
‘গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প। ব্যয় ৮১৫ কোটি টাকা।
‘জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীল ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প। ব্যয় ২ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা।
‘মেঘনা নদীর ভাঙন হতে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় নলের চরে নির্মিত অবকাঠামোসমূহ রক্ষার্থে প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন’ প্রকল্প; ব্যয় ৩৭৮ কোটি টাকা।
‘ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ উপজেলাধীন শুভাঢ্যাখাল পুনঃখনন এবং খালের উভয় পাড়ের উন্নয়ন ও সুরক্ষা (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্প; ব্যয় ৩১৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় মহানন্দা নদী ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প, ব্যয় বাড়ছে ৬৪ কোটি টাকা।
‘বাগেরহাট কালেক্টরেটের নতুন ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয় ১৩০ কোটি টাকা।
‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশুপার্ক আধুনিকীকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় প্রায় ৬০৪ কোটি টাকা।
‘পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক থেকে মাদানী এভিনিউ পর্যন্ত সংযোগকারী দুইটি সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প; ব্যয় ৩১০ কোটি টাকা।
‘সিলেট সড়ক বিভাগাধীন সিলেট (তেলিখাল)-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ (জেড-২০১৩) সড়কের ২৫তম কিলোমিটারে বড়ভাঙ্গা সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয় ১২৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
‘মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগ এর আওতায় রামেরকান্দা-লাকিরচর (রোহিতপুর বাজার) সংযোগ সড়ক (আর-৮২৩) উন্নয়ন’ প্রকল্প; ব্যয় ৫১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ৫০০ বেডেড হসপিটাল ও এনসিলারি ভবন ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ এবং জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতাল, নোয়াখালী (১ম সংশোধন)’ প্রকল্প; ব্যয় বাড়ছে ১ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।
‘শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন (কম্পোনেন্ট-২): দেশের ০৮টি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ইমেজিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ (১ম সংশোধন)’ প্রকল্প, ব্যয় বাড়ছে প্রায় ১৯৫ কোটি টাকা।
‘খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ (১ম সংশোধন)’ প্রকল্প, ব্যয় বেড়েছে ৩৮৭ কোটি টাকা।
‘লিভিং নো ওয়ান বিহাইন্ড: ইম্প্রোভিং স্কিলস অ্যান্ড ইকোনমিক অপরচুনিটিস ফর ওম্যান অ্যান্ড ইয়ুথস ইন কক্সসবাজার বাংলাদেশ’ প্রকল্প; ব্যয় ১৭৭ কোটি টাকা।
‘অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩’ প্রকল্প; ব্যয় ৫৭৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
‘উপজেলা পর্যায়ে ৫০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্প; ব্যয় ৩ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা।
‘রংপুর, নীলফামারী, পীরগঞ্জ শহর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন নেটওয়ার্ক নির্মাণ (১ সংশোধনী) প্রকল্প; ব্যয় বাড়ছে ৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং
‘সৈয়দপুর ১৫০ মে.ও. ±১০% সিম্পল সাইকেল (এইচএসডি ভিত্তিক) বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ (১ম সংশোধন)’ প্রকল্প; ব্যয় বাড়ছে ২৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।