নিবন্ধন করা যাবে পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে গিয়ে; চাঁদাও দেওয়া যাবে অনলাইন ও ডিজিটাল মাধ্যমে।
Published : 18 Aug 2023, 11:15 PM
চালুর দিনই এক হাজার ৬০০ জন চাঁদা দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হয়েছেন; নিবন্ধন করেছেন আরও অনেকে।
সরকারি চাকুরেদের বাইরে সবার জন্য বহুল আলোচিত এ পেনশন কার্যক্রম উদ্বোধনের দিন বৃহস্পতিবারই এতে নিবন্ধন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করা হয়েছে। অনলাইনে চালু হওয়া এ প্রক্রিয়ায় আগ্রহীদের অনেকে প্রথম দিনেই নিবন্ধন করতে শুরু করেন।
শুক্রবার সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বাস্তবায়নকারী সংস্থা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পেনশন স্কিম নিয়ে যে দেশের নাগরিকরা যে আশাবাদী তা প্রথম দিনের সাড়া দেখেই বোঝা যাচ্ছে। দ্বিতীয় দিনের হিসাব বের করা হয়নি। তবে প্রথম দিন ১৬০০ জনের বেশি মানুষ চাঁদা জমা দিয়ে নিবন্ধন করেছেন।
এর চেয়ে আরও অনেক বেশি মানুষ নিবন্ধনের জন্য ফরম পূরণ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু টাকা জমা দেওয়ার আগে কাউন্ট করা হচ্ছে না। প্রথম দিনে চাঁদা বাবদ মোট ৮৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
শুরুতে প্রবাসীদের জন্য ‘প্রবাস’, বেসরকারি কর্মজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্ম ও অপ্রতিষ্ঠানিক খাতের কর্মজীবীদের জন্য ‘সুরক্ষা’ এবং স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য ‘সমতা’ স্কিম চালু করা হয়েছে।
আপাতত চারটি স্কিম চালু করা হলেও ভবিষ্যতে আরও দুটি স্কিম চালু করে মোট ছয়টি স্কিম করা হবে বলে জানিয়েছন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন ঘোষণার মধ্য দিয়ে সর্বজনীন পেনশন যুগে যাত্রা করে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার দীর্ঘদিন থেকে সামাজিক সুরক্ষার এ কার্যক্রম শুরুর কথা বলে আসছিল, যা বাস্তবে রূপ নেয় বৃহস্পতিবার।
ওই দিন থেকেই অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিস্তির চাঁদাও দেওয়া যাচ্ছে অনলাইনে।
সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ নিয়মিত চাঁদা দিয়ে এই পেনশনের আওতায় আসতে পারবেন। এর অংশ হতে পারবেন প্রবাসীরাও। এর মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
পেনশন স্কিমে যুক্ত হয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে চাঁদা দিয়ে গেলে ৬০ বছর বয়স থেকে আজীবন পেনশন মিলবে।
৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কেউ মারা গেলে তার নমিনি মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ হওয়ার বাকি সময় মাসিক ভিত্তিতে পেনশন পাবেন।
এই স্কিম অনুযায়ী যত বেশি বছর টাকা জমা দেওয়া যাবে, তত বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে।
এসব স্কিমের চাঁদার কিস্তি পছন্দ অনুযায়ী মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে। চাঁদা দেওয়ার সময়ের ভিত্তিতে চারটি স্কিমের জন্যই মাসিক চাঁদার পরিমাণ এবং পেনশনের পরিমাণ আলাদা আলাদাভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
নিবন্ধনের কাজটি করতে হবে পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে (www.upension.gov.bd) গিয়ে। পেনশন স্কিমগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সেখানে দেওয়া আছে।
অনলাইনে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে আবেদন করলে আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ইউনিক আইডি নম্বর দেওয়া হবে।
সর্বজনীন পেনশনে নিবন্ধন যেভাবে
৪ ধরনের পেনশন স্কিম, যেভাবে যুক্ত হওয়া যাবে
আবেদনে উল্লিখিত আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে এবং অনিবাসী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় ই-মেইলের মাধ্যমে ইউনিক আইডি নম্বর, চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা জমা দেওয়ার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
যে কোনো স্কিমে নিবন্ধিত হওয়ার পর পেনশন কর্তৃপক্ষ ধার্যকৃত হারে নিয়মিত চাঁদা দিতে হবে। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, অনলাইন ব্যাংকিং, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে মাসিক চাঁদা জমা দেওয়া যাবে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে চাঁদা জমা দিতে পারবেন।