তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবেন বলে আশা মাহবুব আলীর।
Published : 07 Feb 2023, 07:41 PM
এ বছরের অক্টোবরেই দেশের প্রধান বিমানবন্দর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হচ্ছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী মঙ্গলবার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান।
শাহজালাল বিমান বন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৩০টি এয়ারলাইন্সের ১২০ থেকে ১৩০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। এসব ফ্লাইটের ১৯ থেকে ২১ হাজার যাত্রী প্রতিদিন এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। হজ বা বিশেষ সময়ে যাত্রীর চাপ আরও বেড়ে যায়।
এই যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দিতে বিমানবন্দরের বর্তমানে চালু থাকা দুটি টার্মিনাল যথেষ্ট নয় বলে কর্মকর্তাদের ভাষ্য। যে কারণে আরেকটি টার্মিনাল তৈরির এই উদ্যোগ।
২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিং, রাস্তা, কার পার্কিং, কার্গো কমপ্লেক্স, পার্কিং অ্যাপ্রোনসহ আরও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে ২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে সুপরিসর এই তৃতীয় টার্মিনাল। এই অর্থের একটি অংশ প্রকল্প সহায়তা হিসেবে দিচ্ছে জাইকা।
মঙ্গলবার পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব বলেন, “থার্ড টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল ভবন এখন দৃশ্যমান। বর্তমানে টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে। এ বছরের অক্টোবরেই থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে।”
বর্তমান টার্মিনালের অবকাঠামগত সীমাবদ্ধতার জন্য যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত মানের সেবা দেওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে সেবার মান উন্নয়নে সার্বক্ষণিক চেষ্টা চলছে। বিমানবন্দরের কোথাও যেন কোনো যাত্রীকে হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেজন্য মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) প্রতিনিয়ত নজর রাখছে।
তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের পর অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর হলে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবেন বলে আশা প্রতিমন্ত্রীর।
শাহজালালে বৃহস্পতিবার থেকে ৫ ঘণ্টা বিমান ওঠানামা বন্ধ
এখন রাতে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালালে বিমান ওঠা-নামা বন্ধ রেখে রানওয়ের সেন্ট্রাল লাইট লাগানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এই কারণে যাতে যাত্রীদের সমস্যা না হয়, সেজন্য আমরা সচেষ্ট আছি। আইএলএস সিস্টেম আপডেটের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ঘন কুয়াশায় বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা অনেকাংশেই দূর হবে।”
এর আগে সকালে বিমানবন্দরের বর্তমান ১ ও ২ নম্বর টার্মিনাল পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় তিনি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস হল, চেক-ইন কাউন্টার, ব্যাগেজ এরিয়া, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও গ্রিনচ্যানেলে যান।
প্রতিমন্ত্রী এসময় যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন। উপস্থিত যাত্রীরা তাকে জানান, ইমিগ্রেশনে বা লাগেজ পেতে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি।
১ ও ২ নম্বর টার্মিনাল পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বিমানবন্দরের ই-গেইটগুলো চালু আছে। তবে এর সাথে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত থাকায় এগুলো শতভাগ চালু করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
“অন-অ্যারাইভাল ভিসার বিষয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। ইতোমধ্যেই তারা এ বিষয়ে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।”
বিমানবন্দর পরিদর্শনের সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান, শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।