কোভিড মহামারীর প্রথম বছর বাজেট সহায়তা হিসেবে বাংলাদেশকে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিয়েছিল জাপান।
Published : 26 Jul 2022, 12:22 AM
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি জাইকা আগামীতে বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থায়ন আরও বাড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেছেন, “আমার বিশ্বাস, জাইকা ভবিষ্যতের বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা বিবেচনা করে, প্রয়োজনীয় বাজেট সহায়তাসহ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আরও অর্থায়ন বাড়াবে।”
বাংলাদেশ সফররত জাইকার প্রেসিডেন্ট আকিহিকো তানাকা সোমবার সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে অর্থমন্ত্রী তাকে এ কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাইকার প্রেসিডেন্ট সচিবালয়ে গেলে অর্থমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানান। তাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহায়তা ও অর্থনীতির বিভিন্ন খাত নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করার জন্য জাইকা ও জাপান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দেশগুলোর মধ্যে জাপান অন্যতম।
“তারপর থেকেই জাপান আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী এবং সময়ের পরীক্ষিত বন্ধু।”
সম্প্রতি আততায়ীর গুলিতে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি গভীর শোক প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহায়তাকারী বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপান। কোভিড মহামারী শুরুর পরও বাজেট সহায়তা দিয়েছিল পূর্ব এশিয়ার দেশটি।
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালের বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে জাপান সফর করেন।
কোভিড মহামারীর প্রথম বছর বাজেট সহায়তা হিসেবে ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস রেসপন্স ইমার্জেন্সি সাপোর্ট লোন ফেজ-২’-এর আওতায় বাংলাদেশকে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার দেয় জাপান। সে প্রসঙ্গ ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে সেটাই ছিল প্রথম বাজেট সহায়তা।
“এটি আমাদের কোভিড-১৯ মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব প্রশমিত করতে এবং রাশিয়া-ইউক্রেইন সংকট মোকাবেলায় সাহায্য করেছে। দিনে দিনে জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী হয়ে উঠেছে।”
মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের অভিঘাতে বাংলাদেশও এখন ভুগছে। এ অবস্থায় এক দশক বাদে বাংলাদেশ বাজেট সহায়তার জন্য আবার আইএমএফের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে খবর আসে সম্প্রতি।
তবে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফের কাছ থেকে কোনো ঋণ এখন নেওয়া হচ্ছে না। তার এক সপ্তাহের মাথায় জাইকার সঙ্গে আলোচনায় ফের বাজেট সহায়তার প্রসঙ্গ এল।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাইকা প্রেসিডেন্ট আকিহিকো তানাকা জাপানের সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ দেশ’ হিসেবে বর্ণানা করেন
তিনি বলেন, বিভিন্ন অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে। সহযোগিতার সফল বাস্তবায়নের কারণে এ মুহূর্তে জাপানের সরকারি উন্নয়ন সহযোগিতার তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশর অবস্থান অন্যতম।
১০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের সফরের বাংলাদেশ তাকে ‘অভিভূত’ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু ‘সারা বিশ্বকে অবাক’ করে দিয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি ইয়ো হায়াকাওয়াসহ জাইকা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।