ইজিএমে থাকা শেয়ারহোল্ডাদের মধ্যে ৯৬ শতাংশই নাম বদলানোর প্রস্তাব সমর্থন করেছেন।
Published : 26 Dec 2023, 05:41 PM
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ৯৬ শতাংশের সমর্থন থাকায় নাম পাল্টে ‘সোনার বাংলা লিজ ফাইন্যান্স পিএলসি’ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড।
অনিয়ম ও ঋণের নামে টাকা আত্বাসাতের ঘটনায় ডুবতে ব্সা প্রতিষ্ঠানটি নাম বদলালে পুরনো ক্ষত সারতে সহায়ক হবে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক পর্ষদ।
মঙ্গলবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) বিনিয়োগকারীরা নতুন নামের পক্ষে সমর্থন দেন বলে জানিয়েছেন পিপল্স লিজিংয়ের কোম্পানি সচিব আরমিয়া ফকির।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভার্চুয়াল মাধ্যমে ইজিএমে থাকা শেয়ারহোল্ডাদের মধ্যে ৯৬ শতাংশই নাম বদলানোর প্রস্তাব সমর্থন করেছেন।”
এখন কোম্পানির গঠনতন্ত্র সংশোধন করে তা যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে (আরজেএসসি) জমা দিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।
আরমিয়া জানান, ‘সোনার বাংলা লিজ ফাইন্যান্স পিএলসি’ নামের ছাড়পত্র পেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে জানাতে বিশেষ ঘোষণা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে পর্ষদ।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় নাম পারিবতর্নসহ কোম্পানির ব্যবসায় কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে বিনিয়োগাকারীদের (শেয়ারহোল্ডার) অনুমতি লাগে।
এজন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) মাধ্যমে মঙ্গলবার ইজিএম করার তারিখ আগেই জানিয়ে রেখেছিল পিপলস লিজিং।
পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত পিপলস লিজিংয়ের লেনদেন বন্ধ রয়েছে এখনো। সময়ে সময়ে লেনদেন বন্ধ থাকার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। সর্বশেষ গত ১১ ডিসেম্বর পুনরায় আরো ১৫ দিনের জন্য লেনদেন বন্ধ রাখার তথ্য জানায় ঢাক স্টক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই)।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। পিপলস লিজিং এর একটি।
নাম বদলাতে ইজিএম ডেকেছে পিপলস লিজিং
নানা কৌশলে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে গ্রাহকদের হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান বলে ২০২০ সালের শুরুতে খবর আসে। তাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে জারি করা হয় রেড নোটিস। পরে তিনি ভারতে গ্রেপ্তার হন।
অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবতে থাকা পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের জন্য ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিনই মামলার শুনানি শেষে অবসায়নের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
আমানতকারীদের আন্দোলনের মুখে ২০২১ সালের জুন মাসে শুরু হওয়া অবসায়ন প্রক্রিয়া স্থগিত করে কোম্পানি পুনরুজ্জীবিত করতে ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় উচ্চ আদালত।
সেই সঙ্গে আমানতকারী ও ঋণগ্রহীতাসহ পর্ষদের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি ও দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক চেয়ারম্যানকে একগুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক পিপলস লিজিংকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমোদন দেয় ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর। এরপর থেকে গ্রাহকের কাছ থেকে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল এ কোম্পানি।
নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর আমানতকারীদের কিছু অংশ ফেরত দিতে পারলেও এখনো বকেয়া রয়েছে বৃহত অংশই।