দেশের এ অবস্থা সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কর্মসংস্থানেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি।
Published : 16 Oct 2024, 12:11 AM
ক্ষমতার পালাবদলের পর চলমান রাজনৈতিক ‘অস্থিতিশীলতা বেড়ে যাওয়া’, ‘দুর্বল’ করপোরেট গভর্ন্যান্স ও কিছু ব্যাংকের ‘দেউলিয়া’ হয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি বাংলাদেশের দুর্বল হয়ে পড়া আর্থিক খাতকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
দেশের এ অবস্থা সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কর্মসংস্থানেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ব ব্যাংকের কার্যালয়ে প্রকাশ করা ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেটের’ অক্টোবর সংখ্যায় এসব বিষয় উঠে এসেছে।
এ প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, “বাড়তে থাকা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্বল করপোরেট গভর্ন্যান্স এবং কিছু ব্যাংকের দেউলিয়ার মত হয়ে যাওয়া ইতোমধ্যে দুর্বল হয়ে যাওয়া আর্থিক খাতকে আরও খারাপ করতে পারে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।”
এছাড়া দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক কারণ তুলে ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে কমে ৪ শতাংশ হওয়ার আভাসও দিয়েছে সংস্থাটি।
এ প্রতিবেদন প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে ওয়াশিংটন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা, অর্থনীতিবিদ নাজমুস খান ও জ্যেষ্ঠ যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহরীন এ মাহবুব।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পালাবদলের ‘অনিশ্চিত প্রভাবের’ ফলে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কমে ৪ শতাংশে নেমে আসবে বলে অনুমান করা হয়েছে। তবে এটি ৩ দশমিক ২ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে হতে পারে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য উত্থাপিত বাজেটে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে পরিকল্পনা সাজায়। তবে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের দিকে গেলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
বাংলাদেশে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রাথমিকভাবে ছড়িয়ে পড়লেও এটি ‘গভীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জের’ কারণে চালিত হয়েছিল বলে মনে করে বিশ্ব ব্যাংক।
কর্মসংস্থান না বাড়া, প্রকৃত মজুরি কমে যাওয়া ও মূল্যস্ফীতির চাপ এর অন্যতম কারণ। পাশাপাশি কাজের মান এবং দক্ষতার ঘাটতি ও দক্ষতার অমিলের জন্য ‘উল্লেখযোগ্য’ চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বেসরকারি খাতকে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এমন নীতি পদ্ধতির প্রয়োজন, যা ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করে, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করে, রপ্তানি বৈচিত্র্যকে উৎসাহিত করে এবং নিয়োগকারীর চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে উন্নত করে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।