রপ্তানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ অর্থনীতির ভিত্তি সচল রাখতে সহায়তা করেছে বলে মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
Published : 20 Jan 2025, 09:26 PM
সরকারের সংস্কার পদক্ষেপের কারণে দেশের অর্থনীতিতে ধীর গতি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি থাকলেও তা মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার কী ধরনের প্রভাব ফেলছে বা ফেলবে, সেসব বিষয় তুলে ধরতে গিয়ে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক প্রতিবেদনে এমন শঙ্কা ও সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছে।
‘বাংলাদেশ কোয়ার্টারলি’ শীর্ষক জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের এ প্রতিবেদন রোববার প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার যাত্রা শুরুর পর দেশের অর্থনীতি একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তবে ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে।
“২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ঘটতে পারে ৪ দশমিক ১ শতাংশ বলে মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগে শ্লথ ও শিল্প কার্যকলাপ কমে যাওয়ার কারণে বিশ্ব ব্যাংক এ আভাস দিয়েছে।”
ত্রৈমাসিক এ প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানের পর অর্থনীতির তিনটি প্রধান খাত-কৃষি, শিল্প এবং পরিষেবা উল্লেখযোগ্যভাবে বিঘ্নিত হয়। বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকার যখন অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু করে, তখন অগাস্ট ও সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এরপরও রপ্তানিতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি ও রেমিটেন্স প্রবাহ অর্থনীতির ভিত্তি সচল রাখতে সহায়তা করেছে বলে মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে মূলস্ফীতি রেকর্ড বেড়ে ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে উঠে যায়। আগের অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি কমাতে নিজেদের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি আরও জোরদার করা হয়েছে। সামনের দিনগুলোয় মূল্যস্ফীতি দমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনশীল মুদ্রানীতিই অনুসরণ করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, “আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যাংকিং সংস্কারে নেওয়া উদ্যোগ শিগগিরই সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাবে।”
প্রতিবেদনে শঙ্কা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, “সরকারের নেওয়া বড় ধরনের সংস্কার পদক্ষেপের কারণে দেশের অর্থনীতি অদূর ভবিষ্যতে স্লথ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকলেও, তা মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে সুফল বয়ে আনবে।”