ডেটা নিরাপত্তায় নীতি প্রণয়নের পরামর্শ

ঢাকায় তিন দিনের পঞ্চম ‘বাংলাদেশ ইকোনমিকস সামিট’ শুরু হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2024, 07:15 PM
Updated : 15 Feb 2024, 07:15 PM

বর্তমান পরিবর্তিত বাস্তবতায় ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়নের পরামর্শ এসেছে ঢাকায় এক আলোচনা সভায়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ইকোনমিকস সামিট’ এর উদ্বোধন পর্বের আলোচনায় উঠে আসে প্রযুক্তি নিরাপত্তার দিকটিও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ইকোনোমিকস স্টাডি সেন্টার (ইএসসি) তিন দিনের এ সম্মেলনের আয়োজন করে। 

প্রথম পর্বে ‘প্রগতিতে সমতা ও নৈতিকতা: নৈতিক ধারণার দিক নির্ধারক’ শীর্ষক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রযুক্তির উত্তরোত্তর বিকাশ ঘটলেও বাংলাদেশে এখনও কোনো ‘ডেটা নীতি না থাকায়’ উদ্বেগ প্রকাশ করে উইমেন ইন ডিজিটালের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আছিয়া নিলা বলেন, “কোনো অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করার পর ডেটা অ্যালাউ, ডিনাই করার অপশন আসে। ডিনাই করার পরও তারা আমাদের কিছু ডেটা সংগ্রহ করতে পারে। যেহেতু কোনো পলিসি নাই আমাদের দেশে, ফলে তারা ডেটা বিক্রি করতে পারে। ডেটা বিক্রি করাটা আনএথিক্যাল।

“কেউ চাইলে নীতি না থাকার পরও বিক্রি না করতে পারে। এখানেই এথিকসের গুরুত্ব।”

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের সব কাজ নিয়ে নেবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এআইয়ের নিজস্ব কোনো বুদ্ধি নেই। সবার বুদ্ধি নিয়েই চলছে এআই।

“সবাই তাদের বুদ্ধি ইনপুট না দিলে সে ডেটা সংগ্রহ করতে পারবে না। তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। মানুষ কনসেপ্টগুলো জানে কি না, তাদের জানাতে হবে।”

জনমানুষের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে ডেটা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের সীমাবদ্ধতা সমাধানের জন্য সরকারি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক।

তিনি বলেন, “সরবরাহ ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে, সার্বজনীন পেনশন এবং স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়নে ডেটা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে।”

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভার্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এর গবেষণা পরিচালক মুন্সী সোলায়মান বলেন, “অসমতা সম্পর্কে ভাবতে হলে আমাদের নিজেদের পরিচয় ভুলে গিয়ে সার্বজনীনভাবে চিন্তা করতে হবে। প্রথম শিল্প বিপ্লব থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব পর্যন্ত আমরা অসমতার দিক দিয়ে কতটুকুই বা অগ্রসর হতে পেরেছি?”

এর আগে মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে পঞ্চম বাংলাদেশ ইকোনমিকস সামিট এর উদ্বোধন করা হয়।

‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও নতুন শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনা’ স্লোগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইকোনমিকস স্টাডি সেন্টার এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “আমরা শিক্ষকরা শুধু শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দিতে পারি, কিন্তু দেশের কোনো পরিবর্তন আনতে হলে তা কেবল শিক্ষার্থীদের পক্ষেই সম্ভব হবে।

“এই ধরনের সম্মেলন শিক্ষার্থীদের মানসিক দক্ষতাবৃদ্ধি, নেটওয়ার্কিং ও নেতৃত্বগুণ তৈরিতে সহায়তা করবে।”

তিন দিনের সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে আলোচনায় অংশ নেবেন অর্থনীতির বিভিন্ন গবেষক ও নীতিনির্ধারক।

এছাড়া সম্মেলনে থাকবে পাবলিক লেকচার, ইকোনমিকস অলিম্পিয়াড, ডেটা ভিজুয়ালাইজেশন, পলিসি ডিবেট, সমসাময়িক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্যানেল ডিসকাশন, পাবলিক লেকচার ও পাঠচক্রের আয়োজন।