‘অর্থাভাবে’ আটকে গভীর সমুদ্র বন্দর

গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা হলেও অর্থ সংস্থান না হওয়ায় তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2015, 03:40 PM
Updated : 11 June 2015, 03:40 PM

বৃহস্পতিবার সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ একটি মেগা প্রকল্প। এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন, তা কোনো একক প্রতিষ্ঠান বা একক দেশের পক্ষে জোগান দেওয়া দুরূহ ব্যাপার।”

এ জন্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে বলে ভোলা-৩ আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে বলেন নৌমন্ত্রী।

বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দরে নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পে অর্থায়নে চীনসহ কয়েকটি দেশের আগ্রহের কথা ইতোপূর্বে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।

শাজাহান খান বলেন, জি টু জি (সরকার-সরকার) ভিত্তিতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীন, ভারত, নেদারল্যান্ডস ও দুবাইয়ের চারটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এসব প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দিতে গত বছর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়।

কমিটি বর্তমানে প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করছে বলে জানান তিনি।

“আশা করা যায়, খুব শিগগির কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। এরপর গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

মন্ত্রী জানান, কোনো প্রকল্পের একটি পিপিপি (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব) তৈরি করে দাতা দেশ-সংস্থা অনুসন্ধানে ইআরডিতে পাঠানো হয়। কিন্তু পিপিপি-তে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো দাতা দেশ, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সাড়া পাওয়া যায় নি। এরপর প্রকল্পটি জি টু জি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ২০১২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তা নীতিগতভাবে অনুমোদন করে বলেও সংসদে জানানো হয়।

মংলা বন্দরের আকরাম পয়েন্ট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের আটটি সম্ভাব্য স্থানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ২০০৯ সালে জাপানের প্যাসিফিক কনসাল্টেন্ট ইন্টারন্যাশনাল তাদের সমীক্ষা প্রতিবেদনে কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনের সুপারিশ করে।

এছাড়া পটুয়াখালীর পায়রা মোহনায় আরেকটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার।

জুলাইয়ে চালু হবে মংলা-ঘষিয়াখালী রুট

আরেক প্রশ্নের উত্তরে নৌমন্ত্রী জানান, শেলা নদীর বিকল্প নৌরুট হিসেবে মংলা-ঘষিয়াখালী ক্যানেলে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। গত ৬ মে ক্যানেলটি পরীক্ষামূলকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।

“মংলা-ঘষিয়াখালী ক্যানেলটির অবশিষ্ট ড্রেজিং সম্পন্ন করে জুলাই ‍মাসের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে।”

শেলা নদীর নৌ রুট পরিবর্তন করে মংলা-ঘষিয়াখালী বিকল্প রুট সৃষ্টি হলে সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মন্ত্রী জানান।