চব্বিশ বিলিয়ন (দুই হাজার ৪০০ কোটি) ডলারের ঘরও অতিক্রম করেছে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন।
Published : 29 Apr 2015, 07:50 PM
বুধবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ২৪ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান জানিয়েছেন।
এই রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
ছাইদুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মূলত রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ভালো প্রবৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড়িয়েছে।”
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “তেলের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। যার ফলে এ খাতে ব্যয় কমেছে। যা রিজার্ভ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।”
এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের ২২ এপ্রিল রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। বুধবার তা বেড়ে ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল।
মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১০১ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ২২ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ৩০ মার্চ তা ফের বেড়ে ২৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
আকুর মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের বিল শোধ করতে হবে আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে।
তার আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ওপরেই অবস্থান করবে বলে জানান ছাইদুর রহমান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি মাসের ২৪ দিনে (১ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত) ১০৫ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
মাস শেষে রেমিটেন্সের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে অর্থাৎ জুলাই-মার্চ সময়ে ১ হাজার ১২৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় গত বছরের ৭ অগাস্ট। আকুর বিল পরিশোধের পর তা কমে যায়।
২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে তা ১৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ৩০ জুন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়। দুই মাস পরপর পরিশোধ করতে হয় আকুর বিল।