পদ্মা প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনের উত্তর দিতে দেরি হচ্ছে জানিয়ে এজন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছ থেকে যথাসময়ে নথিপত্র না পাওয়াকে কারণ দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
Published : 17 Jun 2013, 01:18 PM
তবে এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ পর্যবেক্ষণে বিশ্ব ব্যাংক গঠিত প্যানেলের প্রতিবেদনের জবাব এই সপ্তাহেই দেয়া হবে বলে সোমবার জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি ইয়োহানেস সুট গত ১১ জুন অর্থমন্ত্রীর কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন সঙ্গে বৈঠক করে ওই প্রতিবেদন তুলে দেন।
সোমবার বিশ্ব ব্যাংককে জবাব দেয়ার কথা সেদিন বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
মুহিত সেই সঙ্গে জানিয়েছিলেন, পর্যবেক্ষক প্যানেলের প্রতিবেদন এবং তা নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ দুটোই যেন বিশ্ব ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়, সেই অনুরোধ জানাবেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনের জবাব দিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দুদকের কাছে চেয়েছিলাম। তারা সে কাগজপত্র দিতে দেরি করছে। আশা করছি কাল (মঙ্গলবার) সেগুলো পাবো।”
বিশ্ব ব্যাংক গঠিত প্যানেলের প্রধান লুইস গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পোর কাছে পাঠানো ওই চিঠি জনসমক্ষে প্রকাশ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুহিত।
প্যানেলের সদস্যরা ঘুরে যাওয়ার ছয় মাস পর প্রতিবেদন হাতে পেয়ে এর বিষয়ে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
২৯১ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে বাংলাদেশের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করেছিলো বিশ্ব ব্যাংক। তবে প্রকল্পের পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দিতে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠায় সেই অর্থ আটকে যায়।
ওই অভিযোগের তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর ওকাম্পো নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের পর্যবেক্ষক দল দুই দফা বাংলাদেশ সফর করে।
ওই দলের অন্য দুই সদস্য হলেন- হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং এবং যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান।
গত ডিসেম্বরে দ্বিতীয় দফা সফরে দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেন পযবেক্ষকরা। শেষ পর্যন্ত মতৈক্য ছাড়াই ঢাকা ছাড়েন বিশ্ব ব্যাংকের পর্যবেক্ষক ওকাম্পো ও তার সঙ্গীরা।
তাদের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার আগেই দীর্ঘ টানাপড়েনের অবসানে চলতি বছর জানুয়ারিতে সরকার বিশ্ব ব্যাংককে ‘না’ বলে দেয়।
সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দুদক একটি মামলা করেছে। সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সাতজনকে আসামি করে দায়ের ওই মামলার এজাহারে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর নাম এলেও তাদের আসামি করা হয়নি।
বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়। আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে এ প্রকল্পে ৬ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা বরাদ্দও রেখেছেনে অর্থমন্ত্রী মুহিত।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণে আগামী ৩০ জুন ৯ হাজার ১৭২ কোটি টাকার দরপত্র ডাকা হবে।