আরও বেশি পেতে জিপি-রবির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক: অর্থমন্ত্রী

নিরীক্ষা আপত্তির টাকা নিয়ে গ্রামীণফোন ও রবিকে যেমন আশ্বস্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল; তেমনি এনবিআরকেও দেখিয়েছেন পথ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2019, 04:30 PM
Updated : 25 Sept 2019, 05:55 PM

বিটিআরসির ১২ হাজার কোটি টাকার দাবি নিয়ে মীমাংসায় বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা চেয়ারম্যান জহুরুল হক, গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলিকে নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী।

বৈঠকের পর পর মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, গ্রামীণফোন ও রবির ব্যবসা ‘মন্থর’ না করে আরও বেশি রাজস্ব আদায়ে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ রাখা হবে।

এর কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অপারেটরদের ব্যবসা যত বেশি হবে, ততই সরকারের লাভ, এ সুযোগ কেন নেওয়া হবে না?

বিটিআরসির দাবি, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের।

কিন্তু টাকার অঙ্ক নিয়ে আপত্তি তোলে গ্রামীণফোন ও রবি; তারা আদালতেও যায়।

এনিয়ে টানাপড়েনে গ্রামীণফোন ও রবির টু জি ও থ্রি জি সেবার লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে এক মাস সময় দেওয়া হয় দুই অপারেটরকে। তার আগেই গত ২৫ অগাস্ট রবি এবং ২৬ অগাস্ট গ্রামীণফোন ঢাকার দেওয়ানি আদালতে দুটি মামলা করে।

এরপর বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিটিআরসি এবং গ্রামীণফোন ও রবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠকে বসেন অর্থমন্ত্রী; তার ধারাবাহিকতায় বুধবার ফের বৈঠক করেন তিনি।

এদিনের আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, “একটি ফলোআপ মিটিং হয়েছে। কাজটি শেষে হলে ডেকে এনে অবহিত করব, আমরা এ তথ্য এখন দেব না। আলোচনা চলছে এবং ফলপ্রসূ আলোচনা চলছে।”

আগের বৈঠকের পর তিনি বলেছিলেন, দুই পক্ষই যেন ‘উইন উইন সিচুয়েশনে’ থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে। সপ্তাহ তিনেকের মধ্যেই আলোচনার ফল পাওয়া যাবে।

বুধবারের বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দীর্ঘদিনের ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে কাজ করছি।”

কবে নাগাদ এ আলোচনা শেষ হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন যাবত এ সমস্যা ছিল, কিছু অন প্রিন্সিপাল আমরা এগ্রি করেছি, তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে না, আমরাও তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব না। মামলা মোকাদ্দমা নয়, টেবিলে বসে সুরাহা করব।”

সরকার তাদের কোনো ছাড় দিচ্ছে কি না- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “গভর্নমেন্ট টাকা মাফ করবে কেন, ওরাও টাকা মাফ চায় না। ডিসপিউট যখন অ্যারাইজ করে এদেরও বক্তব্য থাকে, আমাদেরও বক্তব্য থাকে। আদারওয়াইজ তারা মাফ চাইবে কেন?

“ওরা একটি হিসাব দিয়েছে, প্রতি এক টাকায় ৫৩ পয়সা সরকারকে তার দেয়। যত ব্যবসা বেশি হবে, ততই সরকারের লাভ, আমরা এ সুযোগ নেব না কেন?

“যদি তাদের ব্যবসা শ্লথ করে দিই, মন্থর করে দিই, গতি যদি কমিয়ে দিই, তাহলে আমাদের রেভিনিউ জেনারেশন হাইলি ইমপ্যাক্ট হবে। উই ওয়ান্ট নরমাল অ্যান্ড ফ্রেইন্ডলি রিলেশনশিপ।”

বুধবারের বৈঠকের বিষয়ে গ্রামীণফোন বলেছে, “অমীমাংসিত অডিটের নিষ্পত্তিতে একটি স্বচ্ছ ও গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় একমত হওয়ার জন্য আমরা আজকে আরেকবার বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম।

“কিন্তু আমাদের লাইসেন্স সংক্রান্ত নোটিসসহ বিটিআরসির আরোপিত অন্যান্য নিসেধাজ্ঞা এখনও বহাল থাকায় আমরা উব্দিগ্ন| গত সপ্তাহের মিটিং এ সরকারের সাথে আমরা নীতিগতভাবে যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি সেটিকে সামনে রেখে আমরা একটি স্বচ্ছ সমাধানের জন্য আমাদের আলোচনা চালিয়ে যাব।”