ব্যাংকে লুটে খাওয়ার টাকা নেই: প্রধানমন্ত্রী

ব্যাংক খাত নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যাংকে টাকা থাকলেও তা লুট হচ্ছে না। ব্যাংকের টাকা যারা লুট করেছে তারা দেশান্তর অথবা দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দি।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2019, 12:05 PM
Updated : 17 June 2019, 12:48 PM

অসুস্থ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে বাজেট উপস্থাপন ও সংবাদ সম্মেলনের পর সোমবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেটের উপর সমাপনী আলোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “বলা হচ্ছে, ব্যাংকে টাকা নেই। ব্যাংকে টাকা থাকবে না কেন? অবশ্যই টাকা আছে। তবে, লুটে খাওয়ার টাকা নেই।”

বিএনপি শাসনামলের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী গীগ সভানেত্রী বলেন, “ব্যাংক খাত যারা লুট করে নিয়ে গেছে, তারা দেশান্তর হয়ে পড়ে আছে অথবা দুর্নীতির দায়ে মামলায় কারাগারে বন্দি।  ব্যাংক থেকে নিয়ে তারা (টাকা) দেয়নি। এ রকম বহু ঘটনা আছে। সময় এলে এ ব্যাপারে আরও আলোচনা করতে পারব।”

বাজেট নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “বাজেট নিয়ে ভেতরে-বাইরে অনেক কথা হচ্ছে। কেউ কেউ এমনও বলছে, বাজেট নাকি কিছুই না। যারা এ ধরনের মানসিকতা নিয়ে কথা বলছেন তাদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন- বাজেট যদি সঠিক না হবে, তাহলে মাত্র ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ এত উন্নতি করলো কী করে?”

প্রধানমন্ত্রী বলেন,“ কেউ কেউ বলছেন, বাজেট দিয়েছেন বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তা যদি বলেন, তাহলে ২০০৮ সালে মাত্র ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেয়েছিলাম আজকে সেখানে ৫ লাখ কোটি টাকার উপরে চলে গেছি। বাস্তবায়নের দক্ষতা না থাকলে এটা করলাম কীভাবে?”

সম্পীরক বাজেটের উপর আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, “সরকারের উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায় ও ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়। আর এই প্রাক্কলন করতে গিয়ে সঙ্গত কারণেই আমরা কিছুটা বেশি করি। রাজস্ব আদায়ে খানিকটা উচ্চাভিলাষী হওয়ার প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে।

“আমাদের সমৃদ্ধির পথে বিগত এক দশকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অসম্ভবকে সম্ভব করা, অজেয়কে জয় করা, দুর্ভেদ্যকে ভেদ করারই গল্প। আমাদের উচ্চ বিলাস না থাকলে এসব অর্জন সম্ভব হত না।

সম্পূরক বাজেটের আকারের ব্যাখ্যাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাস্তবতার কারণেই বাজেটে কিছুটা সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, পরিবর্ধনের প্রয়োজন হয় এবং প্রতি বছরই এটা করা হয়।

তিনি বলেন, “বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭.৮ শতাংশ অনুমান করেছিলাম। সংশোধিত বাজেটে তা আমরা ৮.১৩ শতাংশ হবে বলে আজ অনুমান করছি। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৬ শতাংশ নির্ধারণ হয়েছিল, এটি আমরা সাফল্যজনকভাবে অতিক্রম করতে সক্ষম হব বলে আশা করছি। মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ অনুমান করা হলেও সংশোধিত মূল্যস্ফীতি ধারণা করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। বাজেট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে অত্যন্ত সতর্ক থাকার জন্যই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।”

শেখ হাসিনা বলেন, “অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলেই আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বের অনেক দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি। এটা দেখে সারা বিশ্ব আজ অবাক হচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে এখন উন্নয়নের বিস্ময়। যেখানে যাই সেখানেই সেই কদরটা পাই। দেশবাসী সেই সম্মানটা পায়। কাজেই অযথা কিছু কথা বলে সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত না করাই ভালো। আমরা কাজই না করলে দারিদ্র্যের হার ৪০ ভাগ থেকে ২১ ভাগে নেমে আসত না। আমরা এই ২১ ভাগ থেকে আরও নামিয়ে আনবো।””

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা এগিয়ে যাব- বলেন প্রধানমন্ত্রী।