রিজার্ভ চুরির তদন্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সিআইডির কর্মব্যস্ত দিন

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির আলোচিত ঘটনার মামলার দায়িত্ব পেয়েই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2016, 03:10 PM
Updated : 16 March 2016, 07:08 PM

বুধবার দিনভর ব্যাংকেই কাটিয়েছেন সিআইডি সদস্যরা।

চাপের মুখে গভর্নরের পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মঙ্গলবার বিকালে মামলা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা।

মতিঝিল থানায় মুদ্রা পাচার ও তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলাটি করার পর পরই সেটি যায় সিআইডির হাতে।

সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজি শেখ হিমায়েত হোসেন বুধবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, অর্থনৈতিক অপরাধ নিয়ে গঠিত সিআইডির ‘মানি লন্ডারিং ইউনিট’ এবং ‘ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড’ যৌথভাবে এ মামলাটি তদন্ত করছে।

আর সমন্বয় করে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত ডিআইজি শাহ আলমকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বুধবার সকাল ১১টার দিকে শাহ আলমের নেত্বত্বে একটি দল বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন করে। তারা সেখানে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় সিআইডি কর্মকর্তারা গ্রুপ ভিত্তিক আলোচনা ছাড়াও কয়েকটি বিভাগ ঘুরে দেখেন; ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সার্ভার কক্ষটিও তারা পরিদর্শন করেন।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “তারা বেশ কিছু কাগজপত্র যাচাই বাছাই করেছেন এবং কয়েকটির নমুনাও নিয়ে এসেছেন। তবে ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পর দায়িত্ব পাওয়ায় সিআইডির জন্য কাজটি বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।”

বিকাল ৫টারও কিছু সময় পর পর্যন্ত তারা সেখানেই ছিলেন।

১০ কোটি ডলার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে হারানোর খবরটি গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ঘটলেও ফিলিপিন্সের সংবাদপত্র ইনকোয়ারার-এ ওই মাসের শেষে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে তা প্রকাশ্যে আসে।  

ওই অর্থের মধ্যে ফিলিপিন্সে যাওয়া বড় অংশ পাচার হয়ে যাওয়ার পর দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল তদন্তে নামলে বেরিয়ে আসে যে ওই অর্থ ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের।

মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন, প্রতিষ্ঠানটি এখন আলোচনার কেন্দ্রে

ঘটনাটি চেপে রেখে চাপের মধ্যে গভর্নর আতিউর রহমান দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর মামলাটি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তদন্তে অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সিআইডি প্রধান বলেন, “তদন্ত কেবল শুরু হয়েছে, এখনও বলার সময় আসেনি।” 

তদন্ত দলের অন্যতম সদস্য বিশেষ পুলিশ সুপার মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী তদন্ত শুরু করার কথা জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমক বলেন, “সারাদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে কাটিয়েছি। হাইলি টেকনিক্যাল বিষয়, আমরা ইনফরমেশন কালেকশন করছি।”

তিনি জানান, সিআইডি তার নিজস্ব বিশেষজ্ঞ দিয়ে তদন্ত করছে। প্রয়োজনে বিদেশের বিশেষজ্ঞর সহায়তা নেওয়া হবে।

তবে এখনও কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান আব্দুল্লাহেল বাকী।

এদিকে অর্থ লোপাটের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ছায়া তদন্ত শুরু করেছিল র‌্যাব। শুরুতেই তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে সেখানকার কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন। বেশ কয়েকদফা বৈঠকও হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে।  

এ বিষয়ে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিআইডি তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে। যদি তারা আমাদের সহযোগিতা চায়, আমরা এ ব্যাপারে প্রস্তুত আছি।”