ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ঙ শ্রেণির জমির রেজিস্ট্রেশন ফি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
Published : 05 Dec 2023, 06:23 PM
ব্যক্তিগত সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে জমি বা ফ্ল্যাট নিবন্ধনের কর হার পুনর্নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।
তাতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ঙ শ্রেণির জমির রেজিস্ট্রেশন ফি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। আগে এসব জমির বিক্রি মূল্যের ৮ শতাংশ আয়কর দেওয়ার বিধান ছিল। আবার কিছু ক্ষেত্রে ন্যূনতম করের টাকার পরিমাণ কমানো হয়েছে।
আয়কর আইন-২০২৩ এর বিধি-৬ সংশোধন করে জমি রেজিস্ট্রেশন খরচ কমানোর আদেশ দিয়ে ৩০ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর।
নগর এলাকার জমিকে পাঁচ শ্রেণিতে ভাগ করে কর নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ‘ক’ শ্রেণির মধ্যে রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন বাণিজ্যিক এলাকা।
‘ক’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণাধীন আবাসিক এলাকাগুলোকে রাখা হয়েছে ‘খ’ শ্রেণিতে। অন্যদিকে ক-শ্রেণিতে উল্লেখিত সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণে নেই কিন্তু আবাসন কোম্পানি বা ভূমি উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক এলাকাকে রাখা হয়েছে ‘গ’ শ্রেণিতে।
এসব স্থানের (গ শ্রেণিভুক্ত) আবাসিক এলাকাকে রাখা হয়েছে ‘ঘ’ শ্রেণিতে। আর ক, খ, গ, ঘ—ছাড়া বাকি সব জমিকে ‘ঙ’ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে।
এনবিআরের আয়কর অনুবিভাগের সদস্য ড. শামস উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকা জেলার গুলশান, বনানী, মতিঝিল ও তেজগাঁও থানার অন্তর্গত মৌজার মধ্যে ঙ শ্রেণির ভূমির রেজিস্ট্রেশন ফি প্রতিকাঠার বিক্রয় মূল্যের ৮ শতাংশের পরিবর্তে ৬ শতাংশ অথবা ৫ লাখ টাকার মধ্যে যেটা বেশি সেটা পরিশোধ করতে হবে।
একইভাবে ঢাকার ধানমন্ডি, ওয়ারী, তেজগাঁও, শিল্পাঞ্চল থানা, শাহবাগ, রমনা পল্টন, বংশাল, নিউ মার্কেট ও কলাবাগান থানার অন্তর্গত সকল মৌজার প্রতিকাঠার রেজিস্ট্রেশন ফি ৬ শতাংশ বা ৩ লাখ টাকার মধ্যে যেটা বেশি, সেই হারে পরিশোধ করতে হবে।
আবার কাফরুল, মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, ক্যান্টনমেন্ট, চকবাজার, কোতোয়ালি, লালবাগ, খিলগাঁও, শ্যামপুর ও গেন্ডারিয়া এলাকার ঙ শ্রেণির মৌজার জমি নিবন্ধনে করহার ভূমির মূল্যের ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী কাঠাপ্রতি বিক্রি মূল্যের ৬ শতাংশ অথবা দেড় লাখ টাকার মধ্যে যেটা বেশি, সেটা প্রযোজ্য হবে।
ঢাকার খিলক্ষেত বিমানবন্দর, উত্তরা পশ্চিম, মুগদা, রূপনগর, ভাষানটেক, বাড্ডা, পল্লবী, ভাটারা, শাহজাহানপুর, মিরপুর, দারুসসালাম, দক্ষিণখান, উত্তরখান, তুরাগ, শাহ আলী, সবুজবাগ, কদমতলী, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, ডেমরা ও আদাবর এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর, নারায়ণগঞ্জ সদর ও রূপগঞ্জ এলাকার ঙ শ্রেণির মৌজার জমি নিবন্ধনে জমির দামের ৮ শতাংশের পরিবর্তে ৬ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভূমির মূল্যের ৬ শতাংশ বা কাঠাপ্রতি এক লাখ টাকা- যেটা বেশি হবে, সেটা কার্যকর হবে।
চট্টগ্রাম শহরের খুলশী, পাঁচলাইশ, পাহাড়তলী, হালিশহর ও কোতোয়ালি মৌজার ঙ শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন ফি ৬ শতাংশ বহাল রাখা হলেও টাকার অংশ ৩০ হাজার টাকা কমিয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগের বিধি অনুযায়ী প্রতিকাঠা জমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য ন্যূনতম ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হত।
একইভাবে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর থানা, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, সদর, বাসন, কোনাবাড়ী, গাছা ও টঙ্গীর ঙ শ্রেণির জমি নিবন্ধনে জমির দামের ৬ শতাংশ করহার আগের মত বহাল আছে। তবে কাঠাপ্রতি করের পরিমাণ ৮০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই ৬ শতাংশ বা কাঠাপ্রতি মূল্য ৫০ হাজার টাকা– যেটি বেশি সেটা দিতে হবে।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কিন্তু জেলার অন্তর্গত দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, সাভার, ধামরাই এবং চট্টগ্রামের আকবর শাহ, ইপিজেড, কর্ণফুলী, চকবাজার, চান্দগাঁও, ডবলমুরিং, পতেঙ্গা, বাকলিয়া, বায়েজিদ বোস্তামী, সদরঘাট এলাকা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার ঙ শ্রেণির মৌজার কর কাঠাপ্রতি ৩০ হাজার টাকা কমিয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এর আগে এসব এলাকার ভূমি রেজিষ্ট্রেশনের জন্য ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হত।
গত অক্টোবর মাসে মৌজা ভিত্তিতে করহার নির্ধারণ করে সরকার। তখন ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকা ও এর বাইরে অবস্থিত জমিকে মৌজা অনুযায়ী ক থেকে ঙ পাঁচ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।