ব্যাংকের নিজেদের আগ্রহ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগেও মার্জার হতে পারে, বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র।
Published : 04 Mar 2024, 10:31 PM
কিছু ব্যাংক খারাপ হয়ে গেলেও বেশির ভাগই ভালো আছে দাবি করে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের সংগঠন বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেছেন, জনস্বার্থে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা তারা মেনে নেবেন।
ব্যাংক মার্জার বা একীভূতকরণ হলে তা দুর্বল ও ভালো উভয় ব্যাংকের জন্যই ভালো হবে বলেও মনে করেন তিনি।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের বৈঠক শেষে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নানান আলোচনা হলেও ব্যাংকের মার্জারের প্রক্রিয়া এখনও ঠিক করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ নিয়ে গভর্নরের কাছ থেকে ‘উত্তর পেয়েছেন’ মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা যা মনে করেছিলাম গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করার পর বুঝলাম, এতে কোনো সমস্যা নেই। আমরা উত্তর পেয়ে গেছি। ব্যাংক একত্রীকরণ হলে আমাদের কোনো আপত্তি নাই।
‘‘গভর্নর আমাদের জানিয়েছেন, ‘যেগুলো ব্যাংক দুর্বল হয়ে গেছে, খারাপ নয়, ওই ব্যাংকগুলো সবল ব্যাংকের সাথে মেলানোর চেষ্টা করছি, যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয়। মার্জার শুরু করেছি। আমরা হয়ত এটা এক বছরের মধ্যে শেষ করতে পারব’।’’
ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘জনস্বার্থে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সেই সিদ্ধান্তের সাথে আমরা একমত। আমাদের কোনো আপত্তি নাই।’’
ব্যাংক মার্জার নিয়ে নানান আলোচনা ও খবরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক গত এক মাসে পরিচালক নিয়োগে নতুন শর্তারোপ করে দায়িত্বের বিষয়গুলো নির্ধারণ করে নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নিয়োগ ও বাদ দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।
একই সঙ্গে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ব্যাংকারদের দায়িত্বও বাড়িয়েছে আর্থিক খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ইচ্ছেকৃত খেলাপি শনাক্তে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালা তৈরির কাজও শুরু করেছে।
ব্যাংক মার্জার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে বলেন, “বিভিন্ন ব্যাংক, আসলে যেগুলো হয়ত ভালোভাবে চালাতে পারছে না। ইতোমধ্যে একটি ব্যাংক একীভূত করে দিয়েছি। পদ্মা ব্যাংক করা হয়েছে। ঠিক এভাবে আমরা নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা কিন্তু বসে নেই, কাজ করে যাচ্ছি।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংস্কারের উদ্যোগ এবং ঋণে অনিয়ম, জালিয়াতিতে বিভিন্ন কিছু ব্যাংকের দুর্বল হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে মার্জারের বিষয়টি সামনে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়মিত টাকা ধার করে চলছে ডজন খানেকের বেশি ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে আর্থিক খাতের সংস্কারে দুর্বল ব্যাংক নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাওয়ার পর এ নিয়ে আলোচনা এগোতে থাকে।
এমন প্রেক্ষাপটে গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিএবি নেতারা। বৈঠকের পর নজরুল ইসলাম ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রও সামনে আসেন সাংবাদিকদের।
আলোচনার বিষয়ে মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, মার্জারের পুরো নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। ইতোমধ্যে ‘পিসিএ’ নামের একটি নীতিমালা দিয়েছে। এখানে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
‘মার্জার’ ব্যাংকের নিজেদের আগ্রহ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগেও হতে পারে, বলেন তিনি।