ধসের শঙ্কায় চট্টগ্রামে পাহাড় থেকে সরানো হচ্ছে লোকজনকে

পাহাড়ে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে নগরীর ২১টি আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 08:12 AM
Updated : 13 May 2023, 08:12 AM

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে অতি ভারি বর্ষণ ও ভূমিধসের আশঙ্কায় বন্দর নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

শনিবার সকাল থেকে এসব এলাকার লোকজনকে ২১টি আশ্রয় কেন্দ্রে সরানোর কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন।

শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন জানায়, তারা নগরীর আকবর শাহ থানাধীন ফয়েজ লেক সংলগ্ন ১ নম্বর ঝিল, ২ নম্বর ঝিল, ৩ নম্বর ঝিল এলাকা ও শান্তিনগর এলাকা, খুলশী থানার লালখান বাজারের মতিঝর্ণা, বাটালি হিল ও পোড়াকলোনী পাহাড়, চান্দগাঁ থানার আমিন জুট মিলস পাহাড়, টাংকির পাহাড়, ভেড়া ফকিরের পাহাড়, বার্মা কলোনী পাহাড় সহ অতি ঝুঁকিপূর্ণ সব পাহাড় থেকে লোকজন সরাতে কাজ শুরু করেছে।

জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেকটর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাহাড়ি বসতি থেকে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরানোর জন্য শুক্রবার থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। আজ লোকজনকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।

“নগরীর ৯৪টি স্থায়ী সাইক্লোন সেন্টারের মধ্যে ২১টি পাহাড়ি এলাকার আশেপাশে। সেসব আশ্রয় কেন্দ্রে তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।”

তবে বেলা ১টা পর্যন্ত এসব পাহাড় থেকে মোট কতজনকে সরানো হয়েছে তা তাৎক্ষণিক ভাবে জানাতে পারেননি এনডিসি মো. তৌহিদুল ইসলাম।

জেলা প্রশাসনের হিসেবে নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ ২৬টি পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা মোট ৬৫৫৮। এরমধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাহাড় ১৬টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ১০টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবার সকাল ১০টার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল এই তিন বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সাধারণত ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিকে ভারি এবং ৮৯ মিলিমিটার বা তার চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হলে তাকে অতি ভারি বর্ষণ বলে।

বৃষ্টিপাত ৮৯ মিলিমিটারে উঠলে তার প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

মোখার প্রভাবে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ভোলা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোখা এগিয়ে আসতে থাকায় মহাবিপদ সংকেতের আওতায় আসার পর ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপে চট্টগ্রাম বন্দরের ‘অপারেশনাল কার্যক্রম’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেটিতে অবস্থানরত সব জাহাজকে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল ৬টা থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বিমান ওঠানামাও বন্ধ রাখা হয়েছে।

Also Read: ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে পাঁচ জেলায় ভূমিধসের শঙ্কা

Also Read: ঝড়ের আগে চট্টগ্রাম বন্দরে বন্ধ হল সব কাজ