চান্দগাঁও থানা পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় না পেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের অন্যায়ভাবে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শাহাদাত।
Published : 17 Jan 2024, 02:55 PM
দেশে এক মামলায় দুই ধরনের বিচার হচ্ছে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বলেছেন, শাহজাহান ওমর এবং দলের মহাসচিবসহ তিন নেতা একই মামলায় গ্রেপ্তার হলেও শাহজাহান ওমর নির্বাচনে রাজি হওয়ায় তাকে জামিন দেয়া হয়েছে। কিন্তু অন্যদের জামিন দেয়া হচ্ছে না।
বুধবার নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় দলের মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মীর্জা আব্বাস ও শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার হয়েছিল।
“কিন্তু সরকার তাকে (শাহজাহান ওমর) চাপ প্রয়োগ করে নির্বাচনে রাজি করিয়ে রাতারাতি বের করে আওয়ামী লীগে যোগদান করিয়েছে। নির্বাচনে তাকে এমপিও বানানো হয়েছে।
গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার দিন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমরই ছিলেন সবচেয়ে বড় চমক। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষের পর গাড়িতে আগুনের মামলায় ৫ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৯ নভেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। বিএনপির একমাত্র জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে জামিন পাওয়া নিয়ে সেদিনই শুরু হয় নানা আলোচনা।
পরদিন ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয় শাহজাহান ওমরকে, যদিও তার তিন দিন আগে সেই আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন। মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে শাহজাহান ওমর ৯৫ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা শাহাদাত বলেন, “আমাদের প্রশ্ন বিচার বিভাগ কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে? বিচার বিভাগ একপেশে আচরণ করলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? আমাদের চাওয়া রাষ্ট্রযন্ত্র কোন দলের নিজস্ব বাহিনীতে রূপান্তর না হয়ে যাতে তাদের কাঠামো মেনে চলে।”
‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের’ মাধ্যমে সরকার টিকে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রশাসন রাষ্ট্রযন্ত্রকে তাদের অবৈধ ক্ষমতায় টিকে থাকার খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে। এখন আইন আদালত, প্রশাসন, পুলিশ সবকিছুই শেখ হাসিনার ‘হুকুমের দাসে’ পরিণত হয়েছে।”
গত ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন চান্দগাঁও এলাকায় দিনভর বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত বলেন, চান্দগাঁও থানা পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় না পেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের অন্যায়ভাবে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান ও এরশাদ উল্লাহসহ আরও অনেকে নেতা ঘটনার দিন উপস্থিত না থাকার পরও তাদের আসামি করা হয়েছে। অনেকে নিরীহ লোককেও আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামে ৩০টি মামলা করে পুলিশ দলের এক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বলেও অভিযোগ শাহাদাতের।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ইতিহাসের সবচেয়ে কম ভোট পড়া নির্বাচনের মধ্যে অন্যতম দাবি করে চট্টগ্রাম তিনি বলেন, এ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ভোট উৎসবের পরিবর্তে চট্টগ্রামে ভোট বর্জনের এক নীরব প্রতিবাদ ফুটে উঠেছে।
চট্টগ্রাম নগরীর তিনটি আসনের প্রার্থীদের অবস্থান উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এসব আসনে প্রার্থীরা ভোটার আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেখানে ভোট পড়েছে ২০-২৬ শতাংশ। কিন্তু সারাদেশে ভোটের হার দেখানো হয়েছে ৪১ শতাংশের বেশি।
“যেখানে এজেন্ট ছিল না সেখানে জাল ভোটের মহোৎসব হয়েছে। এর মাধ্যমে ভোটের কাস্টিং বাড়ানো হয়েছে।”
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ বেলাল, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আব্দুল মান্নান, সদস্য কামরুল ইসলাম ও দপ্তর সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইদ্রিস আলী।