চট্টগ্রামে বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু, ভর্তি ফেব্রুয়ারি থেকেই

শুরুতে বিশেষায়িত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারটি বিভাগে ৩৫ জন করে মোট ১৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2023, 03:07 PM
Updated : 19 Jan 2023, 03:07 PM

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) পরিচালিত ‘চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি’র (সিবিইউএফটি) নামে বিশেষায়িত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হল।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে বিজিএমইএ ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন চৌধুরী।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের উদ্বোধনে তার সম্মতি জানিয়েছিলেন।

সংবাদ সম্মেলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন নাসির উদ্দিন চৌধুরী। তিনি জানান, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে চারটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। ভর্তির কার্যক্রম শুরু হবে ফেব্রুয়ারি থেকে। আর অ্যাকাডেমিক পাঠদান মার্চ মাস থেকে শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান নাসির উদ্দিন চৌধুরী।

ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, প্রথম দফায় বিএসসি ইন টেক্সটাইল অ্যান্ড ক্লথিং টেকনোলজি (টিসিটি), ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি (এফডিটি), ব্যাচেলর অব অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (এএমএম) এবং ব্যাচেলর অব ফ্যাশন ডিজাইন (এফডি) এ চারটি বিভাগ খোলা হচ্ছে। চার বিভাগে ৩৫ জন করে মোট ১৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।

পরবর্তীকালে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (টিই) ও বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (টিইএম) নামে আরও দুইটি বিভাগ চালু করার কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

নাসির উদ্দিন জানান, এর আগে ২০০২ সালে চট্টগ্রামে ‘বিজিএমইএ ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিআইএফটি)’ নামে প্রতিষ্ঠান  চালু করে ছয় মাস ও এক বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা এবং অ্যাপারেল মার্সেন্ডাইজিংয়ে সার্টিফিকেট কোর্স করানো শুরু করা হয়।

ডিপ্লোমা কোর্স দিয়ে দেশের গার্মেন্টস শিল্পে দক্ষ জনবলের অভাব পূরণ করতে না পারায় গুরুত্ব বিবেচনায় ২০১৩ সালে ‘চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (সিবিআইএফটি)’ নামে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্মাতক ডিগ্রি দিয়ে আসছে বলেও জানান তিনি।

যেখান থেকে ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী স্মাতক ডিগ্রি নিয়ে বিভিন্ন পোশাক করাখানায় কর্মরত আছেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, “দেশে অ্যাপরেল ক্ষেত্রের বিস্তৃতি বাড়ছে। কিন্তু সেই সিলেবাস ‘মডারেট’ করা যাচ্ছে না। যার কারণে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি আমরা। এ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আমরা কাজ করেছি। “

তিনি আরও জানান, দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা দেখে প্রধানমন্ত্রী এ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে প্রথমে সায় দিতে চাননি।

“আগামী পাঁচ বছর পর বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চল চালু হলে কী পরিমাণ দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে সেটি আমরা তাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সম্মতি দিয়েছেন। যার মাধ্যমে গত বছরের ২৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনা অনুমতি লাভ করে” বলেন নাসির উদ্দিন।

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করার প্রত্যাশা রেখে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের দাবি, এর কার্যক্রম সরকারি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা হবে। গুণগত মানের ক্ষেত্রেও তারা কোন আপস করবেন না।

তিনি বলেন, “এটা কোন ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান নয়। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে টাকা রোজগার করাও তাদের উদ্দেশ্য নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। যার কারণে ট্রাস্টি বোর্ড করা হয়েছে। “

বিশেষায়িত বেসরকারি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা থাকার কথাও জানান ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ- চট্টগ্রামের ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান এমএ সালাম, সদস্য হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, শাহেদুল ইসলাম, ফরহাদ আব্বাস, এসএম আবু তৈয়ব, উপাচার্য অধ্যাপক মো. ওবায়দুল করিমসহ বিজিএমইএ ও বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা।