“এটি কেবল দুঃখজনকই নয়, বরং বিশ্ব সংস্থার চরম ব্যর্থতা ও দৈন্যতারই বহিঃপ্রকাশ।”
Published : 24 Mar 2024, 08:18 PM
একাত্তরের ২৫ মার্চ বাঙালি জাতির ওপর পাকিস্তানী বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, সেই দিনটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার দাবি উঠেছে চট্টগ্রামের এক আলোচনা সভা থেকে।
রোববার জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের আলোচনা সভায় এই দাবি জানানো হয়।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুল বলেন, “একাত্তরের ২৫ মার্চ ভয়াল কালরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র নিরাপরাধ ও ঘুমন্ত সাধারণ বাঙালির ওপর যেভাবে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম ভয়াবহ জেনোসাইড।
“একটি জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের দাবিকে চিরতরে মুছে দিতে এবং বাঙালি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার নারকীয় পরিকল্পনা ছিল 'অপারেশন সার্চ লাইট'।”
তিনি বলেন, “এই ভয়াবহতম নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫ মার্চকে জাতীয় 'জাতীয় গণহত্যা দিবস' ঘোষণা করা হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন দিবসটিকে ইতিহাসের ভয়ানক গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।”
সভায় প্রধান আলোচক সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার বলেন, “জাতিসংঘ এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি সুপ্রাচীন ও নিকট অতীতের গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বীকৃতি দিয়েছে অটোমান টার্কদের হাতে ১৯১৫ সালে ১৫ লাখ আর্মেনীয়র গণহত্যা, ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় ৮ লাখ তুতসি জাতিগোষ্ঠির গণহত্যা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাজিদের হাতে ৬০ লাখ ইহুদির গণহত্যা।
“এমন কি স্বীকৃতি দিয়েছে ১৯৯২ সালে বসনিয়া ও ১৯৭৫ সালে কম্বোডিয়ার গণহত্যাকে। কিন্তু পাকিস্তানী সৈন্য ও তাদের দোসরদের হাতে যে ৩০ লাখ বাঙালির পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ ঘটে, যা আক্ষরিকভাবে জেনোসাইড, এর কোনো স্বীকৃতি আজও পর্যন্ত দিতে পারেনি বিশ্ব সংস্থা।”
তিনি বলেন, “এটি কেবল দুঃখজনকই নয়, বরং বিশ্ব সংস্থার চরম ব্যর্থতা ও দৈন্যতারই বহিঃপ্রকাশ। বাঙালি গণহত্যার এই দিবসটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান আজ সময়ের দাবি।”
সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম মন্টু।
আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের মহানগর সাধারণ সম্পাদক সেলিম চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মালেক খান, নারী বিষয়ক সম্পাদক সাইফুন নাহার খুশী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মঈনুল আলম খান, নবী হোসেন সালাউদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের আশেক মাহমুদ মামুন, রাজীব চন্দ, কোহিনুর আকতার প্রমুখ।