বান্দরবানের আলীকদম থেকে চুরি করা লজ্জাবতী বানর ও সজারু ঢাকায় ‘পাচারের’ সময় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের লোহাগাড়া থানার চুনতি রেঞ্জ বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে এরশাদ নামের ৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার কাছ থেকে দুটি লজ্জাবতী বানর এবং একটি সজারু জব্দ করা হয়। বান্দরবানের আলীকদম থেকে ওই প্রাণীগুলো তিনি বাসে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী লজ্জাবতী বানর (Bengal slow loris) এবং সজারু (porcupines) বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণী।
গ্রেপ্তার এরশাদ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার করইবাড়ি গ্রামের নোয়াব মিয়ার ছেলে। তাকে ৫ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচহাজার টাকা অর্থদণ্ডও দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
লোহাগাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহজাহান এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
লোহাগাড়া থানার ওসি মুহাম্মদ আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হানিফ পরিবহনের বাসটিতে এক বন্যপ্রাণী ‘পাচারকারী’ কক্সবাজার থেকে ঢাকায় যাচ্ছে বলে খবর পেয়েছিলেন তারা।
তিনি বলেন, “আমরা চুনতি রেঞ্জ বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিই। বাসটি সেখানে পৌঁছালে থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে এরশাদের কাছে থেকে বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়।“
উদ্ধার হওয়া বন্যপ্রাণীগুলো পরে চুনতি রেঞ্জের বন কর্মকর্তা মাহমুদ হোসাইনের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
মাহমুদ হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লজ্জাবতী বানর দুটি কক্সবাজারের ডুলহাজারা সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। আর সজারুটি চুনতি বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
“আমরা পরপর তিনটি অভিযান চালিয়েছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসব বন্যপ্রাণী চট্টগ্রাম ও ঢাকার পাশাপাশি বিদেশেও পাচার হয় বলে তথ্য পেয়েছি।”
প্রায় দিন পনের আগে ‘বিক্রির জন্য’ নগরীতে আনার সময় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি চিতা বিড়াল, তিনটি মেছো বিড়াল ও একটি মথুরা উদ্ধার করে পুলিশ।ওই প্রাণীগুলো আলীকদম থেকে চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দিন বাজারে নেওয়া হচ্ছিল।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর আলীকদমের পাহাড়ি বন থেকে ধরে নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে নেওয়ার সময় চুনতি অভয়ারণ্য এলাকা থেকে একটি বিপন্ন প্রজাতির উল্লুক উদ্ধার করেছিল বন বিভাগ।
লোহাগাড়া থানার ওসি মুহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, “বান্দরবান জেলার আলীকদম থেকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া হয়ে বন্যপ্রাণী এই পথে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পাচার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এটি পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বন্যপ্রাণী রক্ষায় এখানে সাঁড়াশি অভিযান প্রয়োজন।”