যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃতুদণ্ড কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদেরের ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে সাত দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
Published : 23 Oct 2022, 12:11 AM
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে তার ছেলে ‘শহীদ’ বলার প্রতিবাদে নগরীতে তাদের পারিবারিক বাসভবন ‘গুডস হিল’ ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।
সংগঠনটি বলছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃতুদণ্ড কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদেরের ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী নিজের বক্তব্যের জন্য সাত দিনের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে ২৯ অক্টোবর এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের স্ত্রী-সন্তানদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও সম্পদ বাজেয়াপ্তের দাবিতে এবং বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী, নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড, জঙ্গি মদদ ও নাশকতার প্রতিবাদে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন কেন্দ্র নগরীর গনি বেকারি মোড়ে গুডস হিল ঘেরাওয়ের ওই কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব মো. কামরুল হুদা পাভেল বলেন, “গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে বক্তব্যে দণ্ডিত যুদ্ধাপারাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের নিজের বাবাকে ‘শহীদ’ উল্লেখ করে স্লোগান দেয়। আমরা মনে করি, এটা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমান। হুম্মাম চৌধুরীর বক্তব্য ও অঙ্গভঙ্গি রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল।
“ওই বক্তব্যের জন্য যদি ৭ দিনের মধ্যে ক্ষমা না চায় এবং সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের স্ত্রী-সন্তানদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও সম্পদ বাজেয়াপ্তের দাবিতে এবং বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী, নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড, জঙ্গি মদদ ও নাশকতার প্রতিবাদে গুডস হিল ঘেরাও করা হবে।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রশ্নে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্পষ্ট বক্তব্য এখন সময়ের দাবি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার ও বাহাত্তরের সংবিধানের মূলভিত্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যেতে হবে।“
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে দ্রুত নতুন আইন করার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “এ সংক্রান্ত আইন পাসের আগেই বহু দণ্ডিত ও অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী তাদের সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
“আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইনে দণ্ডিত বা অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি ক্রোক ও বাজেয়াপ্ত করার বিধান নেই। তবে কারান্তরীণ বা পলাতক যুদ্ধাপরাধীরা যাতে সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে না পারে, সে উদ্যোগ নিয়েছে আইসিটির তদন্ত সংস্থা।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগরের কমান্ডার মোজাফফর আহম্মদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মো. সরওয়াল আলম চৌধুরী মনি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রামের আহ্বায়ক শাহেদ মুরাদ সাকু, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সজিব ও সাজ্জাদ হোসেন এবং সদস্য সচিব কাজী রাজিশ ইমরান।