নগরেও কোথাও কোথাও বিদ্যুৎহীনতার ঘটনা ঘটলেও তা একটানা নয় বলে জানিয়েছে পিডিবি।
Published : 08 Aug 2023, 07:39 PM
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে দেড় লাখের বেশি গ্রাহক।
খুঁটি ভেঙে ও সংযোগ লাইনের উপর গাছ পড়ায় সংযোগ বন্ধ রাখার কথা জানাচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায়।
নগরেও কোথাও কোথাও বিদ্যুৎহীনতার ঘটনা ঘটলেও তা একটানা নয় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেসব এলাকায় সমস্যা হচ্ছে, সেসব স্থানে মেরামত করে দ্রুত বিদ্যুৎ ফেরানো হচ্ছে।”
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে বোয়ালখালী, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে।
এ সমিতির জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় বিভিন্ন স্থানে খুঁটি ভেঙে পড়া ও বিদ্যুৎ লাইন ছিঁড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
“নিরাপত্তাসহ নানা কারণে সংযোগ বন্ধ রাখতে হয়েছে। যার কারণে প্রায় পৌনে দুই লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছে।”
দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, পটিয়া, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে সমিতির মহাব্যবস্থাপক বলেন, “এসব উপজেলায় অর্ধশতাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটে ভেঙে গেছে, আর ৭৫টি খুঁটি হেলে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে সংযোগ লাইনের উপর গাছ ভেঙে পড়েও তার ছিঁড়ে গেছে।
দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, “বিভিন্ন স্থানে কোমর সমান পানি জমে উঠে যাওয়ায় আমাদের কর্মীরা যেতে পারছেন না। ভেঙে যাওয়া ও হেলে পড়া খুঁটিগুলোর সরানো যাচ্ছে না।”
চট্টগ্রামে গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়, অস্বাভাবিক উচ্চতার জোয়ার যোগ হলে শুক্রবার বন্দর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শনিবারও এসব এলাকা ছিল পানির নিচে। এ দিন থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় পানি বাড়তে থাকে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পাশাপাশি সব উপজেলায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। ফটিকছড়ি ছাড়া সব উপজেলা কম বেশি প্লাবিত হয়েছে।
“সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা। সাতকানিয়া উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে।”
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় বন্যার্তদের সহযোগিতায় সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করেছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সাথে কক্সবাজারের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর অধীনে হাটাহাজারী, মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলা।
এর মধ্যে হাটাহাজারী উপজেলার মাদার্শা এলাকায় পাঁচ শতাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মহাব্যবস্থাপক মৃদুল কান্তি চাকমা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, মীরসরাই, সীতাকুণ্ড উপজেলায় কোনও সমস্যা না হলেও হাটহাজারী উপজেলার কয়েকটি স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মহাব্যবস্থাপক মৃদুল চাকমা জানান, উত্তর মার্দাশার মাছুয়াঘোনা, মাদারিপোল ও গাবগুলাতল এলাকায় গাছ পড়ে খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় ছয় শতাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
“ওই সব স্থানে পানি থাকায় আমাদের কর্মীরা পানি নেওয়া ও সরানোর কাজ করতে পারছেন না।”