চট্টগ্রাম সিটিতে সব ধরনের বর্জ্য একসাথে সংগ্রহ করায় পুনঃব্যবহারযোগ্য বর্জ্য থাকে মাত্র ৮-১০ শতাংশ।
Published : 03 Jul 2023, 09:00 PM
চট্টগ্রাম নগরীতে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে উঠছে বলে মনে করেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
সোমবার নগরীর টাইগার পাসে অস্থায়ী নগর ভবনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি যৌথ পরামর্শক দলের সঙ্গে সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) বিদ্যমান বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং তা কাটিয়ে উঠতে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় মেয়র বলেন, “চট্টগ্রামের দ্রুত বর্ধমান জনসংখ্যার ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে ঢেলে সাজানো এখন সময়ের দাবি।
“তবে বর্জ্য কেবল অপসারণ করলেই হবে না, বরং এ বর্জ্য থেকে কীভাবে জ্বালানি উৎপাদন করা যায় এবং দূষকের নিঃসরণ কমানো যায় তা নিয়েও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই আমি।”
১৯৯০ সালে চট্টগ্রাম যখন সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয়, তখন জনসংখ্যা ছিল ২০ লাখ। আর এখন এ শহরে বাস করেন ৬০ লাখের বেশি মানুষ।
২০২২ সালের অগাস্ট থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রামে বর্জ্য বিষয়ক একটি সমীক্ষা পরিচালিত হয়।
জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দুটি জাপানি কোম্পানি- জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এবং ইয়াচিও ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন ওই সমীক্ষা চালায়।
সমীক্ষা অনুসারে, চট্টগ্রামে প্রতিদিন আনুমানিক ২১০০ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার ৬৮ শতাংশই গৃহস্থালী বর্জ্য।
সোমবারের সভায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধি দলের সদস্য দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ুঙয়োন ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিয়ুঙ হি ইয়ুন বলেন, “বর্তমানে সিসিসি সব ধরনের বর্জ্য একসাথে সংগ্রহ করায় পুনঃব্যবহারযোগ্য বর্জ্য থাকে মাত্র ৮-১০ শতাংশ। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা অনেক জটিল এবং তা পরিবেশবান্ধব নয়।
“বর্জ্যকে শহর থেকে সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে এনে রাখলে, নগরী পরিষ্কার থাকলেও তা থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস ও জলীয় পদার্থ নিঃসরিত হয়ে পরিবেশের ক্ষতি করে। এক্ষেত্রে কোরিয়ার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগালে সিসিসি বর্জ্যকে পরিবেশবান্ধব উপায়ে ব্যবস্থাপনা করতে পারে।”
কোরীয় প্রতিনিধি দলে ছিলেন দি হ্যাম সোলজ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিনহিয়ুন ক্যাং এবং কোরিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টস এর ম্যানেজার জিওংওয়াং হোং।
এর আগেও কোরিয়ার এই যৌথ প্রতিনিধি দলটি বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে সম্পৃক্ত হতে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছিল।
ইতোমধ্যে চীন ও জাপানসহ একাধিক দেশ এ ধরনের প্রকল্পে নিজেদের আগ্রহ ও প্রস্তাব সিটি করপোরেশনকে জানিয়েছে।
অন্যদের মধ্যে সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল হুদা, সহকারী প্রকৌশলী রিফাতুল করিম সোমবারের সভায় উপস্থিত ছিলেন।