“১৯ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিনে আসামিদের ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা হবে।”
Published : 30 Oct 2024, 08:13 PM
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় করা চোরাচালান ও মাদক আইনের দুই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছে আদালত।
বুধবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনীরার আদালতে মামলা দুটির শুনানির দিন ছিল।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই মামলায় মোট ৩১ জন করে সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আজ মামলা দুটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করা হয়েছে। ১৯ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিনে আসামিদের ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা হবে।”
এর আগে উচ্চ আদালতের আদেশে মামলা দুটির কার্যক্রম স্থগিত ছিল। সেই স্থগিতাদেশ শেষে বুধবার ছিল শুনানির প্রথম দিন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ওই বছরের ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।
পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শুরুতে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় পরে ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়।
দুই পরীক্ষাগারেই নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭টি ড্রামের মধ্যে দুটিতে ৩৭০ লিটার তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
ওই বছর ২৮ জুন চট্টগ্রামের বন্দর থানায় মাদক আইনে মামলা করে পুলিশ। পরে আদালত মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযোগের নির্দেশ দেয়।
সেসময়ের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান আটজনের বিরুদ্ধে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের মালিক নূর মোহাম্মদকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
এ কারণে ‘তদন্তে ত্রুটি’ আছে উল্লেখ করে আদালত ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর র্যাবের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
এরপর ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল এ মামলায় অধিকতর তদন্ত শেষে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন র্যাব-৭ এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী। ওই বছরের ১৩ এপ্রিল শুনানি শেষে আদালত সম্পূরক অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন।
সম্পূরক অভিযোগপত্রে বলা হয়, নূর মোহাম্মদের জ্ঞাতসারেই তেলের সাথে মিশিয়ে কোকেন আমদানি করা হয় এবং এই পুরো ঘটনার শুরু থেকেই তিনি অবগত ছিলেন।
কোকেন জব্দের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটিতে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল দশ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আর বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয় ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি।
এ দুই মামলার আসামিরা হলেন- খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মালিক নূর মোহাম্মদ, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপাক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) একেএম আজাদ রহমান, সিএন্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদের ভাই খান জাহান আলী লিমিটেডের পরিচালক মোস্তাক আহমদ খান, দুই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।
আসামিদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ, মেহেদী আলম, তার ভাই মোস্তাক আহমদ খান এবং দু্ই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া পলাতক। বাকি পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজন জামিনে ও দু’জন হাজতে আছেন।