“দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল জিয়াউর রহমান যখন একদল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করে মাল্টিপার্টি সিস্টেম নিয়ে আসলেন।”
Published : 04 Jun 2024, 10:00 PM
আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে গালাগাল করলেও বিএনপি কখনো শেখ মুজিবুর রহমানকে ছোট করে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়ার পরে বাকশাল ব্যবস্থাকে বাতিল করে দিয়ে গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। এগুলো বাস্তবতা, এসব বললে আওয়ামী লীগের গা জ্বলে যায়। তারা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গালিগালাজ করে এবং তাকে ছোট করে তাকাতে চায়।
“আমরা শেখ মুজিবুর রহমানকে কখনো ছোট করি না। আমরা অন্যান্য যে জাতীয় নেতারা আছেন তাদেরকে স্মরণ করতে চাই, তাদের কথা বলি। কিন্তু আওয়ামী লীগ তা চায় না। একজন ভদ্র মানুষ (শেখ মুজিব) তাদের কাছে সব।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম ফোরাম নামে একটি সংগঠন এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে যখন বাকশাল তৈরি করা হয়েছিল সেখান থেকে আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ছিল না। দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল জিয়াউর রহমান যখন একদল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করে মাল্টিপার্টি সিস্টেম নিয়ে আসলেন। তখন তারা দরখাস্ত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামে নিবন্ধিত করেছিল। এটা আওয়ামী লীগ মনে করতেই চায় না।
“তারা সারাক্ষণ বলতে থাকে জিয়াউর রহমানের কোনো কৃতিত্ব নেই। মিথ্যা অপবাদ, অপব্যাখ্যা দিতে থাকে। বলে জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের চর ছিলেন, তিনি যুদ্ধ করেননি। এ কথাগুলো বললে অনেক কথা চলে আসবে, যেগুলো বললে তাদের পছন্দ হবে না। তাদের শরীরে আগুন ধরে যায় যখন আমরা সত্য কথা বলি।”
মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসি আওয়ামী লীগ চায়নি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “তারা সবসময় চেয়েছে তারা নিজেরা একাই সবসময়ই দেশ শাসন করবে, আর কেউ করবে না। তারা লুটপাট করবে, সবকিছু তারাই নিয়ে যাবে এবং করেছেও তাই। ওই পাঁচ বছর ছিল আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বছর।”
‘জাতিসত্তার রূপকার: রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক সেমিনারের ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী।
বেনজীরকে সরকার গোপনে পাচার করেছে
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আজকে দেখুন, ভাবতে লজ্জা হয়, বলতে লজ্জা হয়। আমাদের পুলিশ ও র্যাবের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদ তার বিরুদ্ধে প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় পাতায় দুর্নীতির খবর বের হচ্ছে। সারা বাংলাদেশে এমন একটা জায়গা নেই যেখানে সে জায়গা কিনেনি বা দখল করেনি।
“এমন কি হিন্দু সম্প্রদায়ের জায়গা পর্যন্ত জোর করে দখল করে নিয়েছে। আর এই সরকার ওই চোরকে, ডাকাতকে বাঁচাবার জন্যে গোপনে পাচার করে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী, যার ওপর আমরা সবচাইতে বেশি ভরসা করি, যাদের ওপর মানুষের আস্থা আছে। আজ সেই সেনাবাহিনী প্রধানের ওপর মার্কিন স্যাংশন আসে। মার্কিন স্যাংশনে বলে দেওয়া হয় কী কী কারণে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে দুর্নীতি প্রধান। তারপর সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দেওয়া। এরকম অসংখ্য বেনজীর ও আজিজ আওয়ামী লীগ তৈরি করেছে।”
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক এস এম সারোয়ার আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার ও এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ।
বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম ফোরামের আহবায়ক একরামুল করিম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সহ কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া, সহ ধর্ম সম্পাদক দিপেন দেওয়ান, সহ উপজাতি সম্পাদক কর্নেল মনিষ দেওয়ান, কক্সবাজার জেলার সভাপতি সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য সাচিং প্রু জেরী, হুম্মাম কাদের চৌধুরী প্রমুখ।