ঘুর্ণিঝড় ‘মিধিলির’ আঘাতে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে প্রাণহানির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, ক্ষতির মুখে পড়েছে ফসলও।
সন্দ্বীপ ছাড়াও মিধিলির হানায় অন্যান্য উপজেলা থেকেও ক্ষয়ক্ষতির খবর এসেছে। তবে এবারে ঝড়ের দাপুটে প্রভাব না থাকায় ফসলে বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা করছে না চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
শনিবার সন্দ্বীপের নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, দ্বীপ উপজেলার উড়িরচর, দীর্ঘাপাড়া ও মগধরা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। তাতে এসব ইউনিয়নে গাছের ডালপালা ভেঙে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য প্রশাসনের হাতে এসেছে।
“ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে, সেগুলোর ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে।"
শুক্রবার বিকালের দিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে তীব্র ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়। ঝড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে সাত জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
এর মধ্যে সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আব্দুল ওয়াহাব (৭২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নে মুনতাহা আরিয়া নামে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রামে জেলা ও ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, "ঘূর্ণিঝড়ের পরপর ২ জনের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। এছাড়া সন্দ্বীপ উপজেলায় ১০০টির মত কাঁচা ঘর ভাঙার তথ্যও জানা গেছে। তবে এর বেশি কোথাও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনও আসেনি।”
তিনি বলেন, কৃষি, মৎস্যসহ বিভিন্ন দপ্তরগুলো তাদের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে। পুরোপুরি তথ্য পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
শুক্রবার বেলা ১টার দিকে ঘূর্ণিঝড় শুরুর পরবর্তী দুই ঘণ্টায় বৃষ্টি ঝরাতে ঝরাতে বেলা ৩টার দিকে তা পুরোপুরি স্থলভাগে উঠে আসলেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ঝড়ের প্রভাব বেশি না থাকায় কৃষিতে চট্টগ্রাম জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি না হওয়ার প্রত্যাশা করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস ছোবহান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কিছু কিছু উপজেলায় ধান হেলে গেছে ও কিছু জায়গায় সবজি ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্যে এসেছে। তাতে উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।”
তেমন কোনো ক্ষতি হবে না আশা করে ছোবহান বলেন, “এখন আমন ধানের মৌসুম, অধিকাংশ জায়গায় ধান পেকেছে এবং কাটাও শুরু হয়েছে। ধান পেকে যাওয়ায় যেসব জায়গায় গাছ হেলে পড়েছে, সেগুলোতে তেমন ক্ষতি হবে না।”
বিভিন্ন উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তৈরি করছেন জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেছেন, সম্পূর্ণ হিসাব পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।