এগুলোর ধারণ ক্ষমতা মোট ৫ লাখ এক হাজার ১১০ জন।
Published : 12 May 2023, 01:45 AM
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ১১২০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য প্রস্তুতিও নিয়েছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলায় ৫৩০টি স্থায়ী ও ৫০০ টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যার ধারণক্ষমতা মোট ৫ লাখ এক হাজার ১১০ জন।
এছাড়া সিটি করপোরেশন নগরীতে আরও ৯০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।
উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাঁশখালীতে ১২২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যার ধারণক্ষমতা ৯৭ হাজার ৬০০ জন। এরপরই দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে ১১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে ৯২ হাজার ৮০০ জন আশ্রয় নিতে পারবেন।
পাশাপাশি নগরীতেও ৭৫ হাজার ২০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার মতো ৯৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বুধবার বিকেলেই জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা হয়েছে।
“মাঠ পর্যায়ে সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়াও ৮ হাজার ৮৮০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের রেসকিউ বোট ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে জানানো হয়।
এনডিসি মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ আছে। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দের সংস্থান হবে।
“এছাড়া ৬০৮ মেট্রিক টন চাল, সাড়ে ৩ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩ দশমিক ৪ মেট্রিক টন ড্রাই কেক, ৩০ হাজার প্যাকেট বক্স ওরস্যালাইন ও ৬০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ রাখা হয়েছে।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলার সম্ভাব্য প্রাথমিক চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম জেলার ১৫ টি উপজেলায় ত্রাণ কার্য হিসেবে চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)।
জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্ষতি কমাতে ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
“নগরীর দামপাড়ায় কন্ট্রোল রুমের ০২৩-৩৩৩-৬৩০-৭৩৯ এই জরুরি সেবা নাম্বারে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য ও সেবা পাবেন চট্টগ্রামবাসী।”
সিসিসি’রদুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটির সভায় সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানলে যাতে সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যায় এবং দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার কাজ যাতে সর্বোচ্চ গতিতে পরিচালিত হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।”
এছাড়াও নাগরিকদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করবে সিসিসি।
পাশাপাশি আরবান মেডিকেল টিম, আরবান ভলান্টিয়ার ও উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় যানবাহন ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সড়কবাতি নির্বিঘ্ন রাখার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।