তিন সপ্তাহ নয়, চুয়েটে স্নাতকের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ৭ দিন

ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বিরোধের জেরে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) কর্তৃপক্ষ স্নাতক পর্যায়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধের যে ঘোষণা দিয়েছিল, তার সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2022, 03:17 PM
Updated : 14 June 2022, 03:17 PM

মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ফারু্ক-উজ-জামান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিন্ডিকেটের ১২৪তম সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও সব পরীক্ষা ২১ জুন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।

আগামী ২২ জুন সব হল খুলে দেয়া হবে এবং ওইদিন থেকে সব শিক্ষা কার্যক্রম আগের মত চলবে।

স্নাতক পর্যায়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম সাত দিন বন্ধ থাকলেও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

এর আগে দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৫ জুলাই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম এবং আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

স্নাতকের ছাত্রদের মঙ্গলবার বেলা ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেখানে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুপুরে উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জরুরি সভায় ৫ জুলাই পর্যন্ত স্নাতকের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও বিকেলে সিন্ডিকেট সভায় তাতে পরিবর্তনেআনা হয়।”

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে নগরীতে। সেদিন সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোর অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে চুয়েট ছাত্রলীগের একাংশ। তারা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়।

সেদিন রাত ৯টায় চট্টগ্রাম নগরীর নিউ মার্কেট থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ছেড়ে যাওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মিলাদ সেরে নেতাকর্মীরা সবাই পৌঁছাতে না পারায় বাস ৩০ মিনিট দেরিতে ছাড়তে বলে ছাত্রলীগের ওই অংশের অনুসারীরা।

ছাত্রলীগের অপর পক্ষ, যারা সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী, তারা তাতে আপত্তি তোলে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ফলে বাস ছাড়ে দেরিতে।

এর জেরে শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কুদরত এ খোদা হল এবং শেখ রাসেল হলের কয়েকটি কক্ষের তালা ভাঙা হয় পাল্টাপাল্টি হামলায়।

রোববার রাতে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় লাঠিসোঁটা ও রামদা নিয়ে। তাতে কয়েকজন আহত হন।

সোমবার রাতে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সবশেষ মঙ্গলবার ভোরে ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বরে লাঠি নিয়ে অবস্থান নেয় কিছু শিক্ষার্থী। তাদের বাধায় ক্যাম্পাস থেকে শহরের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে আসতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা এসব বাসে করেই ক্যাম্পাসে যাতায়াত করেন।

পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালের চেয়ে এখন পরিস্থিতি ভালো। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন আছে।”