চট্টগ্রামের মেট্রোরেল: সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে আগ্রহী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়

চট্টগ্রাম নগরীর প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2022, 03:11 PM
Updated : 13 Jan 2022, 03:11 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে বন্দর নগরীর মেট্রোরেল নিয়ে আলোচনা হয়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) কর্মকর্তারাও অংশ নেন।

ওই সভায় চায়না রেলওয়ে কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিআরসিসিএল) নামের চীনের একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে মেট্রোরেল বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করে।

গত ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ঢাকার পর চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল নির্মাণের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনার পর বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক হল।

সিসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে চীনের সিআরসিসিএল মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ে আাগ্রহ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রী ওই প্রতিষ্ঠানকে মন্ত্রণালয় বরাবরে লিখিত আবেদন করতে বলেছে। এরপর তা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে সিআরসিসিএল বন্দর নগরীতে মেট্রোরেল ও মনোরেল নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাব নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে এসেছিল।

চট্টগ্রামে বিমানবন্দর থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেলের কথা বলা হলেও চট্টগ্রামের বিমানবন্দর সড়কজুড়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলমান।

এমন প্রেক্ষাপটে ব্যয়বহুল বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে যথাযথভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই ও পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন প্রকৌশলীরা।

একই সঙ্গে নগরীর উপকণ্ঠের উপজেলাগুলোর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে মেট্রোরেলের রুটে এসব এলাকাকে যুক্ত করতে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। বিশেষ করে মিরসরাইয়ে নির্মাণাধীন দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরকে মেট্রোরেলের রুটের সঙ্গে যুক্ত করার পরামর্শ এসেছে।

২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রাকযোগ্যতা সমীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান বাসস্থান ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালট্যান্টস লিমিটেডের দেওয়া প্রতিবেদনে নগরীতে মেট্রোরেলের তিনটি র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইনের প্রস্তাব করে।

এর মধ্যে কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রস্তাবিত লাইন-১ এর পথে থাকা বহদ্দারহাট-লালখান সড়কের আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার এবং লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কে নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চার লেইনের এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালে। 

২০১৯ সালে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে তিনটি এমআরটি লাইনে মোট সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য্ ও ৪৭টি স্টেশন প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবে প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়। যাতে মোট ব্যয় দাঁড়ায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা।

সেই প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত এমআরটির অন্য দুটি লাইন হলো সিটি গেট থেকে নিমতলা হয়ে শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বর পর্যন্ত লাইন-২ এর দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার (১২টি স্টেশন) এবং অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গিবাজার ও পাঁচলাইশ থেকে একেখান পর্যন্ত লাইন-৩ এর দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ১৪ কিলোমিটার (স্টেশন ১৫টি)।