চট্টগ্রামে সেই খালের পাড়ে দেয়াল, তবুও সিসিসি-সিডিএ ঠেলাঠেলি

চট্টগ্রামে খালে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নিহতের তিন দিন পর সেই খালের ওপর ফুটপাতের খোলা অংশে দেয়াল উঠেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2021, 03:35 PM
Updated : 1 Oct 2021, 03:35 PM

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেয়ালটি নির্মাণ করা হয়। তবে এটি কারা নির্মাণ করেছে, তা নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন- সিসিসি দায়িত্ব নিচ্ছে না।

সিসিসি’র দাবি তাদের অনুরোধে সিডিএ এই দেয়াল নির্মাণ করেছে। আর সিডিএ’র দাবি তারা নয় বরং সিটি করপোরেশনই খালের মুখে এটি তৈরি করেছে।

সিসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা অনুরোধ করেছি। বলেছি আপনারা এটা করেননি কেন? এটা থাকলে তো দুর্ঘটনা হত না। তারা গত রাতে করে দিয়েছে।”

সিডিএ’র এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার জানা মতে, আমরা সেখানে কোনো দেয়াল তৈরি করিনি। ওটা সিটি করপোরেশন করেছে।”

সোমবার রাতে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় নবী টাওয়ার সংলগ্ন ফুটপাত ধরে নানা ও মামার সঙ্গে হেঁটে যাওয়ার সময় নাছির ছড়া খালে পড়ে তলিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া (১৯)।

এর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর কয়েক টন আবর্জনা সরিয়ে সাদিয়ার মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

খালের ওপরে ও পাশে ফুটপাতের ওই অংশটুকু সরু ছিল এবং বেঁড়া বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল না। ওই রাতে টিপটিপ বৃষ্টি হওয়ায় পা পিছলে সরাসরি আবর্জনাভর্তি খালে পড়ে যান সাদিয়া।

এর আগে ২৫ অগাস্ট নগরীর মুরাদপুর মোড়ে জলাবদ্ধতার মধ্যে চশমা খালে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ। এখনও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।

গত তিন মাসে নগরীর খাল-নালায় পড়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। একের পর এক এসব ঘটনায় নগরীজুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। উন্মুক্ত খাল-নালায় পড়ে পথচারীর মৃত্যু নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয় সব মহলে।

সাদিয়ার মৃত্যুর পরও আগের মতই এই ঘটনার দায় নিতে রাজি হয়নি কোনো সরকারি সেবা সংস্থা।

সিসিসি ও সিডিএ একে অন্যকে দোষারোপ করে এসব ঘটনায়। সিটি করপোরেশেনের দাবি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ করছে সিডিএ। সেখানকার সড়ক সম্প্রসারণ, ড্রেন ও ফুটপাত তৈরি কাজও তারাই করছে। তাই ঘটনাস্থলে নালার উপর স্ল্যাব না থাকার দায় সিডিএ’র।

অন্যদিকে সিডিএ’র দাবি খালের মালিক সিটি করপোরেশন। এ কারণে এগুলো দেখভালের দায়িত্ব তাদেরই হওয়ার কথা।

সাদিয়ার মৃত্যুর পরদিন মঙ্গলবার সকালে নাছির ছড়া খালের ফুটপাতের ওই অংশে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী প্রতিবন্ধকতা দিয়েছিল সিটি করপোরেশন।

এরমধ্যে বৃহস্পতিবার প্রায় একশ স্ল্যাব সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে দিয়ে আসেন সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম। জরুরিভিত্তিতে খোলা নালা ঢাকার ব্যবস্থা করার আহ্বানও জানান তিনি।

নগরী জুড়ে বিভিন্ন স্থানে উন্মুক্ত নালার বিষয়ে জানতে চাইলে সিসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ বলেন, “অন্যান্য স্থানে আমাদের যেসব স্ল্যাব ভাঙা আছে সেগুলো প্রতিস্থাপনের কাজ আগে থেকেই শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর আরও জোরোলাভাবে করা হচ্ছে।

“যেসব জায়গায় দ্রুত স্ল্যাব বসানো যাচ্ছে না সেখানে যে কোনো কিছু দিয়ে প্রটেকশন দিয়ে রাখছি। যাতে লোকজন পড়ে না যায়।”