অবৈধ সম্পদ: ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ফের পিছিয়েছে

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা তৃতীয় দফায় পিছিয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2021, 08:42 AM
Updated : 6 Jan 2021, 08:44 AM

বুধবার চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে শুনানির দিন ধার্য ছিল।

কিন্তু এদিন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময় প্রার্থনা করে। পাশাপাশি আসামিপক্ষও জামিনের আবেদন করে।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর। তদন্ত করতে তাই কিছুটা সময় লাগছে। দুদকের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দিতে সময় চাওয়া হয়েছে।

“আদালত আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। সেদিন পরবর্তী শুনানির দিন। আসামির পক্ষে আগে থেকে কোনো নোটিস না দিয়ে আদালতে আমরা উপস্থিত হওয়ার পর জামিন আবেদন করা হয়। সে বিষয়েও ১০ জানুয়ারি শুনানি হবে।”

বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে থাকা ওসি প্রদীপকে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়নি বলেও জানান আইনজীবী মাহমুদুল হক।

এর আগে প্রথমবার ১৩ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার দিন নির্ধারিত থাকলেও সেদিন তা জমা দেয়নি দুদক। তখন ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিল আদালত। সেদিন প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ৬ জানুয়ারি সময় দেওয়া হয়েছিল।

গত ২০ সেপ্টেম্বর আদালত ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটির এজাহারে উল্লিখিত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন।  

দুদক এর করা আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই আদেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রদীপ কুমার দাশের করা জামিন আবেদনও নামঞ্জুর করা হয়েছিল সেদিন।  

দুদকের করা মামলার এজাহারে, নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা এলাকার একটি ছয়তলা বাড়ি প্রদীপ কুমার দাশ ‘ঘুষ ও দুর্নীতির’ মাধ্যমে অর্জিত অর্থ গোপন করার জন্য শ্বশুরের নামে নির্মাণ করেন বলে উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তীতে ওই বাড়িটি প্রদীপ দাশের শ্বশুর তার স্ত্রী ‍চুমকি কারণের নামে দান করেন। দানপত্র দলিল হলেও বাড়িটি প্রদীপ দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণ কর্তৃক অর্জিত বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

আয়কর রির্টানে আসামি চুমকি কারণের কমিশন ব্যবসা এবং বোয়ালখালী উপজেলায় ১০ বছরের জন্য লিজ নেয়া পাঁচটি পুকুরে মাছের ব্যবসার যে আয় দেখানো হয়েছে তাও স্বামী প্রদীপ দাশের অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের উদ্যেশ্যে ভুয়া ব্যবসা প্রদর্শন করে দেখানো হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করে দুদক।

এই মামলার আরেক আসামি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি কারণ পলাতক আছেন।

এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর টেকনাফের বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে চট্টগ্রামে দুদকের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গত ২৩ অগাস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদি হয়ে ওসি প্রদীপের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় ওসি প্রদীপের সঙ্গে তার স্ত্রী চুমকি কারণকেও আসামি করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭ (১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪(২) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়।

আরও পড়ুন