হালদার মাছ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস মন্ত্রীর

হালদা থেকে পানি নেওয়ার পাশাপাশি এ নদীর মা মাছ রক্ষায়ও প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2020, 01:42 PM
Updated : 30 Oct 2020, 01:42 PM

শুক্রবার পরিদর্শনে এসে হালদা তীরের সাত্তারঘাটে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী ও এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

হালদা নদীর পানি নিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসা দৈনিক মোট ১৮ কোটি লিটার ধারণক্ষমতার দুটি পানি শোধনাগার পরিচালনা করে।

মিরসরাইয়ে নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে পানি সরবরাহে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ কোটি লিটার ক্ষমতার আরেকটি প্রকল্প করতে চায় চট্টগ্রাম ওয়াসা। যার পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত এসেছে।

শুক্রবারের অনুষ্ঠান শেষে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, “হালদার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত সংযুক্ত যেভাবে আছে, আমাদের এ কথাও ভাবতে হবে যে মানুষের বিশুদ্ধ পানি পানের অধিকার রয়েছে। কাজেই বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ কিন্তু আমাদের দায়িত্ব।

“পানি সরবরাহের পাশাপাশি হালদা বা এখানকার মাছ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে হালদা পাড়ের বাসিন্দাদের সাথে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী বলেন, দেশের মৎস্য উৎপাদনে হালদার ভূমিকা বিশাল। স্মরণাতীতকালের সর্বোচ্চ মাছের পোনা এ বছর হালদায় উৎপন্ন হয়েছে।

“মাছের পোনা উৎপাদনে হালদায় অনেক প্রতিকূলতা আমরা অতিক্রম করেছি। এখানে শিল্প কলকারখানার বর্জ্য যাতে নির্গত না হয়, মৎস্য আহরণ বন্ধকালে অসাধু উপায়ে যাতে কেউ মা মাছ ধরতে না পারে এবং কোনোভাবেই হালদায় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র যাতে বিঘ্ন না হয়, নির্বিঘ্নে যাতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে কি না সেটা সরেজমিনে দেখতে আমরা মাঠে নেমেছি।”

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী রেজাউল বলেন, “এখানকার জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ আমাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থা সকলে মিলে কাজ করছে। এজন্য হালদার অতীত ঐতিহ্য ইতোমধ্যে ফিরে এসেছে। আরও ভালো অবস্থানে আমরা যাব।”

মাছ ধরা বন্ধের সময়ে মৎস্যজীবীদের মাঝে চাল বিতরণ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালে সারা দেশের মৎস্যজীবীদের যাতে খাবারের কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য তাদেরকে প্রণোদনা হিসেবে সরকার ভিজিএফ দিচ্ছে। হালদা এলাকায় কেউ বাদ পড়ে থাকলে অবশ্যই তাদের তালিকা হালনাগাদ করে সে সুযোগ দেওয়া হবে।

“এ বছর হালদায় যে পরিমাণ মাছের পোনা পাওয়া গেছে এটা একটা বিশাল সাফল্য। এ সাফল্যের অনেকাংশে অংশীদার এ অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ।”

তিনি বলেন, “মৎস্য আহরণে বিরত থাকা সকল মৎস্যজীবীদের আমরা ক্রমান্বয়ে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসব, যাতে একজন মৎস্যজীবী খাদ্যের অভাবে কষ্ট না পায়। এটা চলমান প্রক্রিয়া।”

অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মাসুক হাসান আহমেদ, চট্টগ্রামের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী, রাউজান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এহেছানুল হায়দর চৌধুরী, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবীর সোহাগ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন, স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।