বাস-ট্রাক বন্ধে ভোগান্তি চট্টগ্রামেও

নতুন সড়ক পরিবহন আইনের বিরোধিতায় ডাকা পরিবহন ধর্মঘটে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রাম থেকেও বিভিন্ন জেলায় বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপদে পড়েছেন সাধারণ মানুষ; ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান না চলায় বন্ধ রয়েছে পণ্য পরিবহনও।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2019, 07:09 AM
Updated : 20 Nov 2019, 07:09 AM

ধর্মঘটের কোনো প্রভাব চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকাণ্ডে না পড়লেও ট্রাক-কভার্ড ভ্যান না চলায় কোনো মালামাল সেখান থেকে বের হচ্ছে না।

পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে বুধবার সকাল অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হলে চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার বাস চলাও বন্ধ হয়ে যায়।

সেন্টমার্টিন পরিবহনের দামপাড়ার কাউন্টার ব্যবস্থাপক নাজির আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকালে তাদের কয়েকটি বাস ছেড়ে গেলেও সাড়ে আটটা থেকে কোনো বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি।

কখন থেকে বাস চলাচল শুরু হবে সেটাও জানাতে পারেননি তিনি।

একে খান এলাকায় ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার কামাল হোসেনও জানিয়েছেন, সকাল থেকে তাদের বাস ছাড়া হয়নি। যারা আগাম টিকেট নিয়েছিলেন তাদের টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে।

বাসে যেতে না পেরে অনেকে যাত্রী ভীড় করেছেন বলে জানান তিনি।

তবে বাস ধর্মঘটের বিষয়টি অস্বীকার করে আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন বলেন, “আমরা কোনো ধর্মঘট করিনি। সকাল থেকে বাসও চালিয়েছি। তবে পণ্য পরিবহন শ্রমিকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের বিভিন্ন স্থানে বাধা দেওয়ায় বাস চলতে পারছে না।

“আমরা দাবি করেছি এ আইনটি ধীরে ধীরে কার্যকর করতে এবং প্রথমদিকে সহনশীল থাকতে পুলিশকে বলেছি। আমরা বাস চলাচল অব্যাহত রাখতে চাই।”

তবে বাস চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাক-কভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, “আমাদের শ্রমিকরা কর্মবিরতি করছেন। আমরা আমাদের পরিবহন চালাচ্ছি না। অন্যদের কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না।”

তবে চট্টগ্রাম নগরীতে ধর্মঘটের খুব একটা প্রভাব পড়েনি। সকাল থেকে নগরীতে গণপরিবহন চলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক দেখা গেছে। 

গত বছর ঢাকায় বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী প্রাণ হারানোর পর দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তির বিধান কঠোর করে নতুন আইন প্রণয়ন হয়, যা কাগজে-কলমে কার্যকর হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। তবে আইনটি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের আগে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে সোমবার থেকে কার্যকর করা হয়।

নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনার মামলায় শাস্তি বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে, এসব মামলা হবে জামিন অযোগ্য। এছাড়া আইনে দুর্ঘটনার জন্য চালক দায়ী হলে ৩০২ ধারা যোগ করার সুযোগও রাখা হয়েছে।

আইনের এই কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। মালিকরাও শ্রমিকদের সমর্থন করছেন।

এই আইনের বিরোধিতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিন বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় মালিক-শ্রমিকরা।