বিমলের অজান্তেই তার নামে ৫টি মোবাইল সিম

বিমল শান্তি চাকমা, চট্টগ্রামের জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নিরাপত্তাকর্মী। তার ব্যবহৃত টেলিটকের সিম তুলতে গিয়েছিলেন এমএম আলী রোডের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে। সেখানে গিয়ে তিনি শুনলেন, তার অজান্তেই আরও পাঁচটি সিম রয়েছে তার নামে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2019, 03:00 PM
Updated : 14 Oct 2019, 03:05 PM

একথা শুনে ভবিষ্যত বিপদের শঙ্কায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বিমল। কেননা এই ধরনের সিম অপরাধীরা ব্যবহার করে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক করে আসছে।

বিমল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০১১ সালের দিকে ঢাকায় কর্মরত থাকার সময় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি টেলিটকের একটি সিম কিনেছিলেন তিনি। চট্টগ্রামে আসার পর বছর কয়েক আগে স্ত্রীর জন্য আরেকটি সিম কেনেন নিজের নামে।

“আমার স্ত্রীর সিমটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ১০ অক্টোবর দামপাড়া টেলিটকের কাস্টমার কেয়ারে গিয়েছিলাম সিম তুলতে সেখান থেকে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয় সাতটি সিম দিয়ে কী করি আমি? কথাটি শুনে আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি।”

বিমল জানান, দুটি টেলিটক সিমের পাশাপাশি নিজের নামে আরও দুটি গ্রামীণফোন ও একটি বাংলালিংক সিম ছাড়া আর কোনো মোবাইল সিম তার নেই।

তিনি বলেন, “কাস্টমার কেয়ার থেকে জানানো সিমের নম্বরগুলো আমি ব্যবহার করি না এবং কখনও ক্রয়ও করিনি। তা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করি। তারা সিমগুলো বন্ধ করার জন্য বিটিআরসির অনুমতির কথা জানিয়েছে।”

এরপর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন  বিমল।

তাতে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন, তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার করে কোনো চক্র এ কাজটি করেছে।

২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সিম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকের তথ্য ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন সিম নিবন্ধন করে উচ্চ দামে বিক্রির অভিযোগে আটকও হয়েছে বিভিন্ন স্তরের সিম ব্যবসায়ী।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলে আসছিলেন, কিছু সংঘবদ্ধ চক্র গ্রাহকের অজান্তে তাদের বায়োমেট্রিক সংগ্রহ করে সিম নিবন্ধন জালিয়াতি করে আসছে।

বিমলের করা সাধারণ ডায়েরি নিয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভিন্ন সময় গ্রাহক সিম কেনার সময় বিক্রেতারা কয়েকবার করে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে গ্রাহকের অজান্তেই সিম নিবন্ধন করে ফেলার তথ্য আমরা বিভিন্ন সময়ে পেয়েছি।

“এ ধরনের অভিযোগে চট্টগ্রামে বেশ কিছু ব্যবসায়ী গ্রেপ্তারও হয়েছে। তারাও আমাদের জানিয়েছে নেটওয়ার্ক সমস্যার কথা বলে তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে একাধিক আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে কিছু সিম নিবন্ধন করে রাখে। পরে সেগুলো উচ্চ দামে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন।”

পরিদর্শক কামরুজ্জামান বলেন, “বিমলের যে নম্বরগুলো জিডিতে উল্লেখ করেছেন সেগুলো কোথায় ব্যবহৃত হচ্ছে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”