গ্রাহকের অজান্তে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে সিম নিবন্ধন, আটক ৪

গ্রাহকের অজান্তে তার আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে একাধিক মোবাইল সিম নিবন্ধন ও সেসব সিম গোপনে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে এক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2019, 04:06 PM
Updated : 5 Sept 2019, 04:06 PM

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- ফেরদৌস সরোয়ার রবিন (২৮), মিনহাজুল ইসলাম (২৩), মিশু আহমেদ (৩০) এবং জাবেদ ইকবাল (৩০)।

এই চক্রের জালিয়াতির শিকার কয়েকজন গ্রাহকের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বলেন,  “এই চক্রটি আঙ্গুলের ছাপ ও আইডির তথ্য ব্যবহার করে সিম নিবন্ধন করে। গ্রাহক সেটা জানতেও পারে না। এসব অবৈধ সিম বেশি টাকার বিনিময়ে যাদের এনআইডি নেই এমন লোকজনের কাছে বিক্রি করে।”

গ্রেপ্তারদের মধ্যে ফেরদৌস সরোয়ার রবিন একে খান টেলিকম লিমিটেড নামের একটি পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের হয়ে মোবাইল অপারেটর রবির সিমের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। মিনহাজুল ইসলাম ও মিশু আহমেদও একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাকলিয়ার বলিরহাট এলাকার মুদি দোকানদার মুহাম্মদ ইসমাইল তার দোকানে অন্য পণ্যের পাশাপাশি মোবাইল রিচার্জ করেন ও রিচার্জ কার্ড বিক্রি করেন।

“৫ মার্চ সকালে ইসমাইলের মোবাইল রিচার্জের কাজে ব্যবহৃত সিমটি নিবন্ধনের কথা বলে তার আঙ্গুলের ছাপ নেয় রবিন।”

পরে বুধবার ইসমাইলের দোকানে অন্য দু’জনসহ এসে আবারও তার আঙ্গুলের ছাপ নেয় রবিন।

এতে সন্দেহ হওয়ায় অপারেটরের নির্ধারিত সেবার নম্বরে ডায়াল করে ইসমাইল জানতে পারেন তার পুরনো এনআইডি ও বর্তমান স্মার্ট কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে মোট ৩০টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে। যদিও তিনি ব্যবহার করছেন মাত্র চারটি সিম।

ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন,  “খোঁজ নিয়ে ওই এলাকার মোট সাত জনের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে এভাবে সিম নিবন্ধনের তথ্য পাই আমরা।

“এরপর রবিন, মিনহাজুল ও মিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে এরকম ৩১টি সিম কার্ড, একটি নোট প্যাড, তিনটি মোবাইল ও একটি কেবল জব্দ করা হয়।”

এছাড়া গ্রেপ্তার তিনজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এরকম প্রায় দেড়শ সিমসহ জাবেদ ইকবালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তবে এই জালিয়াতির প্রক্রিয়ায় মোবাইল অপারেটরের দায় নেই উল্লেখ করে উপ-কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান বলেন,  “এই চক্রের সদস্যরা কৌশলে এ কাজ করে। তাদের পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা তদন্ত করছি।”

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যেহেতু চট্টগ্রাম শহরে অবৈধ সিম কেনার মত লোক কম এবং কাছেই কক্সবাজার জেলা। তাই এসব সিম হাত ঘুরে রোহিঙ্গাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব।”