অসন্তোষের মধ্যেই ফের খোঁড়াখুঁড়িতে চট্টগ্রাম ওয়াসা

চট্টগ্রাম ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি নিয়ে নগরবাসীর চরম অসন্তোষের মধ্যেই আবার নভেম্বর থেকে নগরীজুড়ে সড়ক খোঁড়ার কথা জানালো সংস্থাটি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2019, 06:06 PM
Updated : 20 August 2019, 06:06 PM

মঙ্গলবার নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) ৪৯তম সাধারণ সভায় এ কথা জানান চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ।

এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

সভায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল্লাহ বলেন, “নগরীতে পুরনো পাইপ লাইন সংস্কার ও নতুন পাইপ লাইনে সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা।

“এই প্রকল্পের আওতায় ৪১টি ওয়ার্ডের ৬৫০ কি.মি. পুরোনো পাইপ লাইন সংস্কার ও প্রায় ৫০ হাজার নতুন পাইপ লাইন সংযোগ দেয়া হবে। নভেম্বরের দিকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।”

তিনি বলেন, “প্রকল্পটি জাইকার অর্থায়নে শুরু হবে। আগামী বছর মার্চে এই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।”

এ প্রকল্পের জন্য সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সহযোগিতা চেয়ে তাদের কাছ থেকে নিজ নিজ এলাকার সড়কের তালিকাও চান ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

৩০ অগাস্টের মধ্যে সড়কের তালিকা দিতে মেয়রের কাছেও অনুরোধ করেন তিনি।

প্রকৌশলী ফজলুল্লাহ বলেন, “তালিকা অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করা হলে আগামী একশ বছরে আর পাইপ লাইন সংস্কার বা সংযোগ করতে হবে না। কেননা এই প্রকল্পে ব্যবহৃত পাইপগুলোর মেয়াদ একশ বছর। তাই আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে তালিকা পেলে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসুত্রিতা সৃষ্টি হবে না।

“ওয়াসার সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশন সহায়তা দিয়ে আসছে। সিসিসি’র রাস্তা কর্তনের অনুমতি, প্রকল্প সহায়ক নানামুখী সহযোগিতার কারণেই ওয়াসা নগরে উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে সড়কের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেজন্য পুরোনো পাইপ লাইন সংস্কারের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।”

সভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, “এলাকার জীবনমান উন্নয়ন ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনগণের কাছে জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা আছে। নগরীর অনেক এলাকায় এখনও ওয়াসার সংযোগ লাইন স্থাপিত হয়নি।

“আবার অনেক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপিত হলেও এলাকায় পানি সরবরাহ করতে পারেনি ওয়াসা। এ নিয়ে জনগণের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আবার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে রাস্তা কর্তন করে ওয়াসা। এতে করে সৃষ্টি হয় নানামুখী দুর্ভোগ ও হয়রানি।”

সভায় সিসিসি’র প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, ছালেহ আহমদ, কফিল উদ্দিন ও জহিরুল আলম জসিম তাদের নিজ নিজ এলাকার পানীয় জলের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

সভায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, বর্তমানে নগরীতে ৩৬কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে সংস্থাটি। আগামী বছর আরো ১৪কোটি লিটার সরবরাহ বাড়বে বলেও জানান তিনি।

নগরীতে পানির দৈনিক চাহিদা ৫০ কোটি লিটার।

বাড়ছে অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন

সিসিসিতে নিয়োজিত দৈনিক ভিত্তিক অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয় মঙ্গলবারের সাধারণ সভায়।

সিসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে এবং ডোর-টু-ডোর কর্মচারীদের ১০ শতাংশ হারে বেতন বাড়বে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিসিসি তে ছয় হাজার ৩১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দৈনিক ও নির্ধারিত বেতনে কর্মরত আছেন।

অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই বেতন বৃদ্ধির ফলে প্রতিমাসে ৫৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। বছরের অতিরিক্ত ব্যয় হবে ছয় কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

সাধারণ সভায় সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দীন আহমদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন-উর-রশিদ হাজারী, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম এবং কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।