জামায়াতের হামিদুরের পিএইচডি সেমিনার তদন্তে কমিটি

জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ এইচ হামিদুর রহমান আযাদকে 'বিধি বহির্ভূতভাবে' পিএইচডি সেমিনার করার সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2019, 03:03 PM
Updated : 9 July 2019, 03:03 PM

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের  ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ।

তিনি মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হামিদুর রহমান আযাদের পিএইচডির রেজিস্ট্রেশন মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বিধি বহির্ভূতভাবে সেমিনার করার ঘটনা তদন্তে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

তদন্ত কমিটিতে সমাজতত্ত্ব বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা শাখার উপরেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনকে সদস্য-সচিব করা হয়েছে।

কমিটিকে ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে’ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান নূর আহমেদ।

তিনি জানান, “পিএইচডি রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সেমিনার করার সুযোগ প্রদান করায় ঘটনায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, পিএইচডি সুপারভাইজার ড. এ এফ এম আমীনুল হক, সেমিনারের আহ্বায়ক ড. মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন কাদেরীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে।”

তাদের আগামী তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি হামিদুর রহমান আযাদ কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বিচারাধীন বিষয়ে অবমাননাকর বক্তব্য ও দেশে ‘গৃহযুদ্ধ’র হুমকি দেওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগে ২০১৩ সলের ৯ জুন হামিদুর রহমান আযাদসহ তিন জামায়াত নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এদের মধ্যে হামিদুর রহমান আযাদকে তিন মাসের কারাদণ্ড এবং তিন হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই সপ্তাহের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।

প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে তাকে কারাগারে পাঠায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

হামিদুর ২০১১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধীনে ‘বাংলায় ইসলামী রাজনীতির উৎপত্তি ও বিকাশ’ শীর্ষক পিএইচডি বিষয়ে ভর্তি হন।

অভিযোগ উঠেছে, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হামিদুর রহমান আযাদের পিএইচডির মেয়াদ শেষ হলেও ২০ জুন তার পিএইচডি সেমিনার আয়োজন করে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ।

এ বিষয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এনামুল হক বলেন, “যথাযথ নিয়ম মেনেই এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। পিএইচডি গবেষণার রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই গবেষক কর্তৃপক্ষের কাছে মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন ইতোমধ্যে করেছেন। কর্তৃপক্ষ যদি রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ বৃদ্ধির সেই আবেদন গ্রহণ করে, তাহলে পিএইডি দেওয়া হবে, না করলে তা বাতিল হবে।”

"গত বছরের (২০১৮) মে মাসে ওই গবেষক এখানে (একই বিভাগে) প্রথম সেমিনার করেন। তখন তো বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি," বলেন তিনি।