মামলা ‘গুরুত্বপূর্ণ’, খবর নাই বছরেও

চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের শিক্ষিকা অঞ্জলী রানী দেবী হত্যার বছর গড়ালেও ঘটনায় জড়িতরা গ্রেপ্তার হয়নি। আর মামলাটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও হত্যার রহস্য জানা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার স্বামী ডা. রাজেন্দ্র চৌধুরী।

উত্তম সেন গুপ্ত চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2016, 05:19 PM
Updated : 9 Jan 2016, 05:19 PM

শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমাদের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ না থাকার পরও এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ ঘটনার পর আরও হত্যাকাণ্ড হয়েছে; সেসব ঘটনায় খুনিরা ধরাও পড়েছে।

“অথচ এই হত্যার কোনো কিনারা হচ্ছে না। কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে অন্তত সেটা আমি জানতে চাই।”

রাজেন্দ্র বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পর আমাকে টেলিফোনে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি পুলিশকেও জানিয়েছিলাম।”

গত বছরের ১০ জানুয়ারি সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার তেলিপট্টি লেইন এলাকায় অঞ্জলী রানীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে দুর্বত্তরা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছিলেন, হামলার পর অঞ্জলীর পাশে তার ব্যাগ ও মোবাইল ফোন পড়ে ছিল।

অঞ্জলী হত্যাকাণ্ডের দিন বিকালে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন তার স্বামী ডা. রাজেন্দ্র। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডটি ‘পরিকল্পিত’ এবং পেশাদার খুনিরা এতে অংশ নেয় বলে মনে করেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) কুসুম দেওয়ান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি আমরা গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে নিয়েছি এবং এটিকে সবসময় প্রাধান্য দেওয়া হয়।”

নগরীতে উল্লেখযোগ্য সব হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তার করা হলেও এ মামলার অগ্রগতি নেই স্বীকার করে তিনি বলেন, “মামলাটিকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

এদিকে অঞ্জলী হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঘটনার ছয় মাস পর ১৩ জুন রাতে মো. রেজা নামে পটিয়া জামেয়া আল ইসলামীয়া মাদ্রাসার সাবেক ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তিনি এখনও কারাবন্দি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কেশব চক্রবর্ত্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি আমরা গুরুত্ব নিয়ে তদন্ত করছি এবং বিভিন্ন বিষয়ে মাথায় রেখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

তবে এখনও হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।  

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পুলিশ তদন্ত করে সেখানে তেমন কিছু পায়নি। তবে নার্সিং কলেজে হিজাব আন্দোলনের বিষয়টি পুলিশ মাথায় রেখেছে।”

চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে হিজাব পরতে নিষেধ করার পর কলেজ কর্তৃপক্ষকে রেজা উকিল নোটিস পাঠিয়েছিলেন বলেও তিনি জানান।