চট্টগ্রামে ঘরে হাত-পা বাঁধা লাশ: মজুরি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন, গ্রেপ্তার ১

এ ঘটনায় জড়িত আরেক ব্যক্তি পলাতক, জানাল পিবিআই।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2023, 11:54 AM
Updated : 4 March 2023, 11:54 AM

চট্টগ্রামে চার দিন আগে তালাবদ্ধ ঘরে মুখ ও হাত-পা বাঁধা যুবকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের পর ‍পুলিশ বলেছে, ‘মজুরি’ নিয়ে বিরোধের জেরে সহকর্মীরা তাকে খুন করেছে।

শুক্রবার ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আব্দুর রহমানকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

হত্যাকাণ্ডের পর আরেক সহকর্মীসহ আব্দুর রহমান পালিয়ে যায় বলে পুলিশের ভাষ্য; তার বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায়, তবে থাকতেন চট্টগ্রামের টাইগারপাস রেলওয়ে কলোনিতে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ওই কলোনির কুয়ার পাড় এলাকায় ১১ নম্বর বিল্ডিংয়ের সামনের খালি জায়গায় অবৈধভাবে নির্মাণ করা একটি টিন শেড ঘরের তালা ভেঙে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে ওই বাড়ির মালিক ছেনুয়ারা লাশ দেখে শনাক্ত করে তার নাম সালাউদ্দিন বলে জানান। গত ২২ জানুয়ারি তিন সহকর্মী মিলে থাকার জন্য বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন সালাউদ্দিন।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সালাউদ্দিনের সঙ্গে আব্দুর রহমান ও পলাতক অপর ব্যক্তি মেলায় স্টল তৈরির কাজ করতেন। কাজের পর ‘কম মজুরি’ দেওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে ‘ক্ষোভ’ থেকে তাকে খুন করে তারা পালিয়ে যান।

অপর যে ব্যক্তি পলাতক, তাকে সবাই ‘সিলেটি স্বপন’ নামে চিনতেন বলে জানায় পুলিশ।

Also Read: বন্ধ ঘরে হাত-পা বাঁধা লাশের নাম জানা গেলেও মিলল না পরিচয়

Also Read: চট্টগ্রামে তালাবন্ধ ঘরে হাত-পা বাঁধা লাশ

পরিদর্শক ইলিয়াস বলেন, লাশের সুরতহালের সময় সালাউদ্দিনের আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে তার পরিচয় জানতে পারেন। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবতে তার বাড়ি।

সালাউদ্দিন এক মাস আগে চট্টগ্রামে আসেন জানিয়ে তিনি বলেন, আব্দুর রহমান ও সিলেটি স্বপনকে নিয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শিল্প পণ্য মেলা ও হালিশহর আবাহনী মাঠে অনুষ্ঠিত মেলায় স্টল তৈরির কাজ করেছিলেন সালাউদ্দিন। সেখানে কাজের মজুরি নিয়েই তার সঙ্গে তাদের ‘দ্বন্দ্ব’ শুরু হয়।

একটি চায়ের দোকানে কাজ করার সুবাদে সালাউদ্দিন ও সিলেটি স্বপনের সঙ্গে পরিচয় হয় বলে জানান আব্দুর রহমান।

আব্দুর রহমান পিবিআইকে আরও জানান, সবাই কাজ করলেও মজুরি নিতেন সালাউদ্দিন। পরে সালাউদ্দিন তা ভাগ করে দেওয়ার সময় প্রাপ্য মজুরি থেকে কম টাকা পরিশোধ করায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো।

এর জেরে তারা সালাউদ্দিনকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করে; পরে তারা একটি ছুরিও কেনেন বলে পিবিআইকে জানান আব্দুর রহমান।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিনি পুলিশকে আরও বলেছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি স্বপন আর তিনি কাজে যাননি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সালাউদ্দিন ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১টার দিকে স্বপন ঘুম থেকে উঠে তাকে ডেকে তোলেন। পরে দুজন মিলে সালাউদ্দিনকে খুন করে বাইরে থেকে তালা দিয়ে পলিয়ে যান।

পরিদর্শক ইলিয়াস বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর তারা প্রথমে ফেনী যান। সেখান থেকে কুমিল্লা। পরে তারা নরসিংদী গিয়ে হাটে কুলির কাজ নেয়ার চেষ্টা করে। কাজ না পেয়ে আব্দুর রহমান কুমিল্লায় শ্বশুড়বাড়িতে চলে যান।

“শ্বশুড়বাড়ি থেকে ‍একদিন বালু শ্রমিকের কাজ করেন। তার স্ত্রী ঢাকার ধানমণ্ডিতে বিভিন্ন বাসায় বুয়ার কাজ করায় সেখানে থাকেন। যার কারণে সেও স্ত্রীর কাছে চলে যায়।”