আওয়ামী লীগ ‘এতিম’, তারেকের সিদ্ধান্তের ফয়সালা রাজপথে: খসরু

“ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা বার্তা দিচ্ছেন স্পষ্টভাবে; যদি বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিচের দিকে যায়, তাহলে তাদের সঙ্গে সম্পর্কও নিচের দিকে যাবে,” বলেন বিএনপি নেতা খসরু।

চৌদ্দ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ ‘এতিম’ হয়ে গেছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তারেক রহমানের ‘ফয়সালা’ হবে রাজপথে।

শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের নূর আহমদ সড়কে মহানগর বিএনপি আয়োজিত ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচির আগে সমাবেশে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন খসরু।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা এবং নিত্যপণ্যের দাম কমানোসহ নানা দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন দেশের সব বিভাগীয় শহরে এ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি ও সমমনারা।

বিএনপি মাঠে নামার দিন কর্মসূচি দেওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের তীব্র সমালোচনা করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ আজ এতিম হয়ে গেছে। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। পুলিশের পিছে পিছেও ঘুরছে। আর ছুরি, লাঠি, দা নিয়ে তারা শান্তি সমাবেশ করছে। ওরা নাকি জনগণের সম্পদ রক্ষা করবে।”

জনগণের ‘সম্পদ রক্ষার’ দায়িত্ব আসলে কার, সে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “আইন রক্ষার জন্য একজন থাকবে। হয়ত পুলিশ থাকবে নতুবা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা থাকবে। দুইটা তো থাকতে পারে না। দেশে যদি আইন থাকে তাহলে পুলিশ থাকবে। দেশে যদি আইন না থাকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দা, ছুরি নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবে।”

এসব করে বাংলাদেশের মানুষকে ‘দমানো যাবে না’ মন্তব্য করে বিএনপি এ নেতা বলেন, “জনগণ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাবে। চট্টগ্রামের আজকের পদযাত্রার সমাবেশ ওয়াসার মোড়, এনায়েত বাজার মোড় পার হয়ে গেছে। লক্ষ জনতা রাস্তায় নেমে গেছে। এরা কেউ বাড়ি ফিরে যাবে না।”

 

‘স্পষ্ট বার্তা’

বাংলাদেশকে নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকরা ‘কী ভাবছেন’, সে বিষয়ে নিজের মতামত বক্তৃতায় জানান আমীর খসরু।

তিনি বলেন, “ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা বার্তা দিচ্ছেন স্পষ্টভাবে। যদি বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিচের দিকে যায়, তাহলে তাদের সঙ্গে সম্পর্কও নিচের দিকে যাবে। ভোট চুরির নির্বাচন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, খুন, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই।

“বিশ্ব বিবেক আজ আজ বিএনপির পাশে দাঁড়িয়েছে। আগামী নির্বাচন যদি আগের মত করে, দিনের ভোট রাতে চুরি করে, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ বুঝিয়ে দেবে 'কত ধানে কত চাল’।”

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।

দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, “আমরা মেগা পদযাত্রা শুরু করলাম। আরেকটা দলের ছটফটানি শুরু হয়ে গেছে। সে দল হচ্ছে চোরের দল, ডাকাতদের দল, ব্যাংক লুটেরাদের দল, মানি লন্ডারের দল।

“সে দলের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। যদি আস্থা থাকত পুলিশ বাহিনীর সমর্থন নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করত না। তারা (পুলিশ) যদি সমর্থন উইথড্র করে, তাহলে তো তারা (আওয়ামী লীগ) রাস্তায়ও নামতে পারবে না।

“আমরা রাস্তায় আছি, থাকব। এই সরকারের পদত্যাগ করিয়েই আমরা ক্ষান্ত হব। তাদের দলের নেতারা বলেন শেখ হাসিনা আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়!’’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, হারুনুর রশীদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানও এ সমাবেশে বক্তব্য দেন।

সমাবেশ শেষে কাজীর দেউরী নূর আহম্মেদ সড়ক থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে লাভ লেইন মোড়, জুবিলি রোড, তিনপুলের মাথা, বোস ব্রাদার্স, ডিসি হিল, বৌদ্ধ মন্দির, লাভলেইন হয়ে আবারও দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।