বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ছুটির সময় বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের চাপ যত হয়, তার কয়েকগুণ বেশি ভিড় হয় উন্মুক্ত স্থানগুলোতে।
Published : 09 Apr 2024, 11:07 PM
ঈদ আর নববর্ষ মিলে এবার পাঁচ দিনের টানা ছুটি। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে অনেকেই যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি। যারা শহরে থাকছেন, তাদের জন্য চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নেওযা হয়েছে আগাম প্রস্তুতি।
চিড়িয়াখানা
চট্টগ্রাম নগরীর বিনোদন কেন্দ্রেগুলোর অন্যতম চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। স্বল্প মূল্যের টিকিটের কারণে এখানে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে ছুটির দিনগুলোতে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এখানে আগের চেয়ে পশু-পাখির সংখ্যা ও বৈচিত্র্য বেড়েছে। খাঁচাগুলোর আয়তন বাড়ানোসহ বিভিন্ন কাজ আগেই সম্পন্ন হয়েছিল। তাই চিড়িয়াখানা নতুন করে সাজানোর তেমন কিছুই নেই।
“আশা করছি ঈদ-নববর্ষের ছুটিতে প্রায় ৭০ হাজার লোক সমাগম হতে পারে। তাই ছুটি শুরুর আগে পুরো চিড়িয়াখানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ চলছে। বিভিন্ন স্থানে রঙ করা হচ্ছে নতুন করে। অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।”
বুধবারের মধ্যেই রঙের কাজগুলো শেষ হবে বলে আশা করছেন ডেপুটি কিউরেটর শুভ।
ফয়’স লেক
পাহাড়, বন এবং হৃদ দিয়ে ঘেরা ফয়’স লেক কমপ্লেক্স। বিনোদনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্যও নগরবাসীর পছন্দের শীর্ষে থাকে ফয়’স লেক। অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, লেকে ভ্রমণ, ওয়াটার পার্ক, বেইজ ক্যাম্পসহ নানা আয়োজন আছে এ কমপ্লেক্সে।
ফয়’স লেক কমপ্লেক্সর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “ঈদের ছুটিতে আশা করছি অনেক লোক সমাগম হবে। ঈদের দিন বিকাল থেকে শুরু হয়ে নববর্ষের দিন পর্যন্ত দর্শনার্থীদের চাপ থাকবে বলে আশা করছি।”
তিনি বলেন, ঈদের দিন থেকে দর্শনার্থীদের জন্য নানা রকম আয়োজন থাকবে। গেইম শো, মিউজিক শো এবং ম্যাজিক শোসহ থাকবে বেশ কিছু ইভেন্ট। ওয়াটার পার্ক সি-ওয়ার্ল্ডে হবে ডিজে শো। এছাড়া দল বেঁধে বেইজ ক্যাম্পও করতে পারবে যে কেউ।
বিশ্বজিৎ বলেন, ঈদে দর্শনার্থীদের সামাল দিতে তাদের কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঈদের ছুটিগুলো তার পরে কাটিয়ে নিতে পারবে। তবে ছুটির দিনে কাজ করায় নিয়মানুযায়ী তাদের ভাতাও দেওয়া হবে।
ঈদের আয়োজনে বেইজ ক্যাম্পে মূল্য ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক।
উন্মুক্ত আড্ডায়
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ছুটির সময় বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের চাপ যত হয়, তার কয়েকগুণ বেশি ভিড় হয় উন্মুক্ত স্থানগুলোতে।
পতেঙ্গা, পারকী সমুদ্র সৈকত, হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকার বিপুল জনসমাগম ঘটে। পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে বায়েজিদ লিঙ্ক রোড, আউটার রিং রোড এবং মাস কয়েক আগে উদ্বোধন করা টানেলে দেখতেও ছুটির দিনগুলোতে বিপুল মানুষের সমাগম ঘটে। তাছাড়া মানুষ জড়ো হয় কর্ণফুলী নদীর ধারেও।
এসব উন্মুক্ত স্থানে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের হিসাবে, ফয়’স লেক, চিড়িয়াখানা, আগ্রাবাদ শিশু পার্কের মত বিনোদন কেন্দ্রগুলো ছাড়াও বেশি লোক সমাগম ঘটে ফিরিঙ্গী বাজার, সদরঘাট এলাকার কর্ণফুলী নদীর তীর, সিআরবি, ডিসি হিল, শাহ আমানত ব্রিজ, পাহাড়তলী নিঝুম পার্ক এবং পতেঙ্গা সৈকতে এলাকায়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপারেশন) মো. জাহাঙ্গীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানগুলোতেও অনেক লোক সমাগম হয়। সব বিবেচনায় নিয়ে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, থানা পুলিশের নিয়মিত টহলের বাইরে এলাকার আয়তন অনুযায়ী অতিরিক্ত পিকেট ডিউটিতেও থাকবেন পুলিশ সদস্যরা, যাতে দর্শনার্থীরা নিরাপদে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।