১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল সূর্যসেনের নেতৃত্বে একদল যুবক পুলিশ ও পাহাড়তলী অক্সিলিয়ারি ফোর্সের অস্ত্রাগার দখল করেন।
Published : 18 Apr 2025, 09:37 PM
চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের দিন- ১৮ এপ্রিলকে জাতীয় যুব দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
শুক্রবার বিকালে নগরীর জেএম সেন হল মাঠে চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ দিবসের ৯৫তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠান থেকে এ দাবি জানায় তারা।
বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম বলেন, সমাজতন্ত্র ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার সংস্কারের নামে সংবিধান থেকে সমাজতন্ত্রকে উৎখাত করতে চায়। আগামীতে বাংলাদেশের রাজনীতি মাস্টারদা সূর্যসেনের আদর্শের কাছে ফেরত যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মো. শাহ আলম। আলোচকদের মধ্যে ছিলেন যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা, যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য চেওধুরী জোসেন ও চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সভাপতি রিপায়ন বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে ১৮ এপ্রিলকে জাতীয় যুব দিবস ঘোষণা করা এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক জালালাবাদ পাহাড়টি সেনাবাহিনী থেকে অধিগ্রহণ করে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে সেখানে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার দাবি জানায় যুব ইউনিয়ন।
১৯৩০ সনের ১৮ এপ্রিল মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে একদল যুবক চট্টগ্রামকে ৪ দিনের জন্য ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করেছিলেন।
সূর্যসেনের নির্দেশে চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা সেদিন দামপাড়া পুলিশের অস্ত্রাগার ও পাহাড়তলী অক্সিলিয়ারি ফোর্সের অস্ত্রাগার দখল করেন। টেলিফোন ভবনের টেলিফোন বোর্ড চূর্ণ-বিচূর্ণ করে পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দেন।
বিপ্লবীরা ধূম ও লাঙ্গলবন্দ রেলস্টেশনের নিকটবর্তী রেললাইনের ‘ফিসপ্লেট’ তুলে ফেলেন এবং টেলিগ্রাফের তার কেটে দেন।
বিদ্রোহের আগে ব্রিটিশ সরকারের নিষ্ঠুর অত্যাচার হতে দেশকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে বিপ্লবীরা ইশতেহার বিলি করেন। অভ্যুত্থান শেষে বিপ্লবীরা দামপাড়া পুলিশ অস্ত্রাগার মাঠে সমবেত হয়ে অস্থায়ী সরকার ঘোষণা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও সর্বাধিনায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনকে ‘গার্ড অব অনার’ দেন। এ অভ্যুত্থানই ‘চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ’ হিসেবে পরিচিত।
সমাবেশ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে রক্তকরবী, আনন্দ নৃত্যকলা একাডেমি, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন ও ব্যান্ড দল ‘নিঃশব্দ নাবিকের দল‘।