ষড়যন্ত্র না ঠেকালে দেশ ‘নিশ্চিহ্ন’ হবে: নাছির

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানতে হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানান চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র নাছির উদ্দীন।

দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলা ‘ষড়যন্ত্র’ মোকাবিলা করতে না পারলে দেশ ‘নিশ্চিহ্ন’ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।  

তিনি বলেছেন, "আমরা এখন একটি কঠিন সময় অতিক্রান্ত করছি। দেশ বিদেশে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে না পারলে আমরাই শুধু নয়, সমগ্র বাংলাদেশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।“ 

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানতে হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রামের সাবেক এই মেয়র। এজন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের এখন থেকেই মাঠে নামার তাগিদ দেন তিনি। 

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে বুধবার চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরের টিআইসি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন নাসির। 

জনগণই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস মন্তব্য করে তিনি বলেন, " জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলেছে, চলছে এবং চলবে। এই ষড়যন্ত্রগুলো সাময়িক সফল হলেও কখনো আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হয়নি। 

"জনগণকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ বার বার ক্ষমতায় এসেছে। এবং জনগণের জন্য এপর্যন্ত যা কিছু অর্জন হয়েছে তা একমাত্র আওয়ামী লীগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে।"

নগর কমিটির নেতা নাছির বলেন, "সংগঠন যদি শক্তিশালী না হয় এবং ভিত্তি যদি সৃদৃঢ় না থাকে তাহলে এই চ্যালেঞ্জ (ষড়যন্ত্র) মোকাবিলা করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ বছর ধারাবাহিক ক্ষমতায় থেকে জনগণকে যা দেবার তার সবকিছুই দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের তিনকোটি উপকারভোগী পরিবারকে নানাভাবে প্রণোদনা দিয়েছেন এবং সামাজিক সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করেছেন। 

"আমরা যদি এই তিন কোটি উপকারভোগী পরিবারকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে দলের পতাকাতলে নিয়ে আসতে পারি তাহলে কোন অপশক্তি আওয়ামী লীগের বিজয়কে ঠেকাতে পারবে না।" 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নাছিরের পরামর্শ হল, যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। 

"পরনিন্দা ও পরচর্চা বাদ দিয়ে আত্মসমালোচনা করুন এবং নিজের আয়নায় নিজের মুখ দেখুন। থানা, ওয়ার্ড এবং মহানগর পর্যায়ে যিনি যে দায়িত্বে আছেন সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন।" 

আলোচনায় সভায় সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, "দেশ বিভাগের পর পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর পরই বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন এই নতুন ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে কখনো বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য তিনি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নের বুনিয়াদ হল ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা। 

"৬ দফাকে ১ দফায় পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।" 

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন নগর কমিটির সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা সফর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ চৌধুরী।  

সভার শুরুতে নগর কমিটির সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য ডা. মো. আফছারুল আমীন, শ্রম সম্পাদক আব্দুল আহাদ ও নগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য অমল মিত্রের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয় এবং ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবসে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।