দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির না হওয়ায় এদিন সাক্ষ্যগ্রহণও হয়নি।
Published : 13 May 2024, 09:08 PM
স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় শুনানিতে এসে অসুস্থ বোধ করেছেন পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার।
সোমবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। তবে এদিন সাক্ষী হাজির না হওয়ায় শুনানি হয়নি।
আদালত আগামী ১৫ মে সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। পরে আসামি বাবুল আক্তারকে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ দুজন ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ের সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু কোনো কারণে উনারা হাজির হতে পারেননি। তাই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
“তাই এই মামলার কার্যক্রম বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শেষ হয়। এরপরও বাবুল আক্তার বিচার প্রার্থীদের জন্য রাখা বেঞ্চে বসা ছিলেন। মধ্যাহ্ন বিরতিতে তিনি দুপুরের খাবার খান। এরপর উনার শরীর একটু খারাপ লাগছিল বলে জানান। জ্বর জ্বর লাগছিল বলেছিলেন। কিছুক্ষণ বেঞ্চে শুয়ে বিশ্রাম নেয়ার পর উনাকে নিয়ে যাওয়া হয়।”
এ বিষয়ে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) এস এম হুমায়ুন কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতে শুনানির দিনে বাবুল আক্তারকে আনা হয়েছিল। উনার জ্বর বলে তিনি উপস্থিতদের জানিয়েছেন। তিনি প্যারাসিটামল খেতে চান। আমরা আদালত ও কারা কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টি জানাই।
“যেহেতু ওষুধ দেয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই, পরে তারা চট্টগ্রাম জেলা কারাগারের সাথেও যোগাযোগ করে বলে শুনেছি। এরপর উনাকে ফেনী কারাগারে নিয়ে গেছে। সেখানেই উনাকে রাখা হয়েছে। মামলার শুনানিতে ফেনী কারাগার থেকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়েছিল।”
মিতুর টাকায় তাকে খুন করান বাবুল আক্তার: মা
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল এই মামলার শেষ শুনানির দিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ বলেছিলেন, পরকীয়ার জেরে বাবুল আক্তার তার স্ত্রী মিতুকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করিয়েছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসপি বাবুল ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোনো কূলকিনারা করতে না পারার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই।
এরপর ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। আর এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল।
বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন। তবে সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই পুনরুজ্জীবিত হয়।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।