দণ্ডিত মিজানুর ঘটনার সময় একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে পাঁচ দিনের ছুটিতে চট্টগ্রামে এসেছিলেন।
Published : 20 Jan 2024, 03:33 PM
এক যুগ আগে এক কলেজছাত্রীকে অপহরণের দায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার সাবেক পরিদর্শক মিজানুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ধর্ষণচেষ্টার দায়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছে আদালত।
চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা বৃহস্পতিবার আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আরিফুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অপহরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মিজানুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আর ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
উভয় সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) অনুসারে, আসামির হাজতবাসকালীন সময় সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি কলেজের এক ছাত্রী ও তার এক ছেলেবন্ধু নগরীর ফয়’স লেকে বেড়াতে গেলে পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর তাদের জোর করে গাড়িতে তুলে চকবাজার এলাকার ‘আল আকাবা’ হোটেলে নিয়ে যায়।
সেই রাতে দু’জনকে হোটেলের দুটি কক্ষে আটকে রেখে ওই তরুণীকে মিজানুর ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ চালান। সে সময় ওই ছাত্রী হোটেল কক্ষের শৌচাগারে আশ্রয় নেন এবং কাচ দিয়ে নিজের হাত কেটে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করা হয়।
ওই বছরের ১৬ জুলাই ছাত্রীর বাবা পাঁচলাইশ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মিজানুরকে তখন বরখাস্ত করা হয়।
ঘটনার সময় মিজানুর একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে পাঁচ দিনের ছুটিতে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় দায়িত্ব পালনের আগে মিজানুর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় কর্মরত ছিলেন।
তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হলে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। ১২ বছর ধরে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার রায় দিল আদালত।
ঘটনার পর প্রায় সাড়ে তিন মাস পলাতক থাকা মিজানুর রহমান ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির হলে বিচারক মিজানুরকে কারাগারে পাঠায়েছিলেন। ২০১২ সালের জুলাই মাসে তিনি হাই কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল তার জামিন বাতিল করে ফের কারগারে পাঠানো হয়।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)