বিএনপি যখন দুর্নীতির অভিযোগ করে, তখন ‘গাধাও হাসে, হনুমানও ভেংচি কাটে’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হাছান মাহমুদ বলেন, “দুর্নীতির ও টাকা পাচারের কারণে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শাস্তি হয়েছে। লুটের টাকা বিদেশে পাচার করার কারণে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এফবিআই এসে বাংলাদেশে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে।
“দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিএনপি বিশ্বচোরের উপাধি অর্জন করেছিল। সেই বিশ্বচোর বিএনপি যখন দুর্নীতির অভিযোগ করে, তখন শুধু মানুষ নয়, গাধাও হাসে, হনুমানও ভেংচি কাটে।”
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আজকে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের বিরুদ্ধে একগাদা দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যারা নিজেদের দুর্নীতির কারণে পর পর বাংলাদেশকে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন করেছিল তারা কারা? তারা হচ্ছে বিএনপি।”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “পৃথিবীর দিকে চোখ মেলে তাকান। নিজেদের চেহারা একটু আয়নায় দেখুন। কীভাবে তাদের সময়ে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।”
বই মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বই পড়া ছাড়া মানুষের জীবন কখনো সমৃদ্ধ হয় না। যারা পৃথিবী বদলে দিয়েছে, মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে, সাহিত্য বদলে দিয়েছে, পৃথিবীর মানচিত্র বদলে দিয়েছে, তারা সবাই বই পড়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
“আগে পাড়ায় পাড়ায় লাইব্রেরি ছিল, মানুষ বই পড়ত। এখন তরুণ ও কিশোরদের মধ্যে সেই অভ্যাস নাই। বই পড়ার অভ্যাসটা কেড়ে নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মোবাইল ফোনের আসক্তি। এটা বড় যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যায়, ছাত্রছাত্রীরা বই পড়ার চেয়েও মোবাইল ফোনের আসক্তিতেই মগ্ন।
“এই প্রবণতা থেকে কিশোর-তরুণদের রক্ষা করতে হবে। তা না হলে আমরা ভবিষ্যতে এমন একটি প্রজন্ম পাব, যেই প্রজন্ম হয়তো প্রযুক্তিতে অনেক দক্ষ হবে কিন্তু জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবে না।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “বই না পড়া যেমন অপরাধ, বই পোড়ানো আরও বড় অপরাধ। আপনাদের মনে আছে ২০১৪ সালে সেই নতুন বই সংরক্ষিত ছিল স্কুল ঘরে। সেই বইয়ের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাঁচশ স্কুল ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। নির্বাচন প্রতিহতের নামে এই কাজটি করেছে বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট।
“শিক্ষার্থীদের বই নয় শুধু তাদের ভবিষ্যৎ পুড়িয়ে দিয়েছে। সেই পোড়া বই বুকে জড়িয়ে ধরে শিক্ষার্থীরা আহাজারি করেছে। রাজনীতির নামে বই পোড়ানো এমন ঘটনা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে ঘটেছে কিনা সন্দেহ!”
সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অমর একুশে বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু এবং সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম।