সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি জানি না, উনি এটাতে (মিতু হত্যাকাণ্ড) জড়িত আছেন কি না, আল্লাহই ভালো জানেন।”
Published : 01 Dec 2024, 10:06 PM
মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে ‘সৎ লোক’ বলে দাবি করেছেন আলোচিত এ মামলার আরেক আসামি এহতেশামুল হক ভোলা।
রোববার কারা ফটকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার জানা মতে, উনি খুব সৎ লোক। আমি অনেক আগে থেকে উনাকে চিনি। উনি কোন ঘুষ-টুস নিতেন না। আমি জানি না, উনি এটাতে (মিতু হত্যাকাণ্ড) জড়িত আছেন কি না, আল্লাহই ভালো জানেন।”
সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল জামিনে মুক্তি পেতে পারেন, এমন সংবাদ শুনে কারাফটকে আসেন মিতু হত্যা মামলায় জামিনে থাকা ভোলা, যাকে এই হত্যকাণ্ডে ‘অস্ত্রদাতা’ হিসেবে সেময় পুলিশ বলেছিল। কারাফটকে ভোলা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এই মামলায় তাকে ও বাবুল আক্তারকে জড়ানোর কারণ জানতে চাইলে ভোলা বলেন, “মূল উদ্দেশ্য হল প্রশাসনিক দ্বন্দ্ব। রেয়াজুদ্দিন বাজারে একটা স্বর্ণের চোরাকারবার নিয়ে অপারেশন করছিল না, এটা নিয়ে।”
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সে সময়কার চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন বাবুল।
ঘটনার পর টানা সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কোনো কূলকিনারা করতে না পারায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। এসময় পিবিআই প্রধান ছিলেন বনজ কুমার মজুমদার।
পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় এবং মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন। তবে মিতুর বাবার করা সেই মামলা আদালতে না টেকায় বাবুলের মামলাটিই আবার পুনরুজ্জীবিত করা হয়। ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই বাবুলকে গ্রেপ্তার করে।
এহতেশামুল হক ভোলা বলেন, “যিনি হত্যকাণ্ডে জড়িত উনি খাইছে একটা মামলা। আমারে গেট থেকে রিঅ্যারেস্ট করে করে পাঁচটা ছয়টা মামলা দিছে।”
গ্রেপ্তার অবস্থায় নির্যাতনের কারণে তার কিডনি নষ্ট হয়েছে ও হার্টে ব্লক হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা চাই এই মামলাটা পূর্ণ সাক্ষ্যগ্রহণ হয়ে বিচার হোক। যারা জড়িত তাদের বিচার হোক। বর্তমান সময়ে এসে সুষ্ঠু বিচার পাব ইনশাল্লাহ।”
বাবুল আক্তারের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল দাবি করে ভোলা বলেন, “উনার সঙ্গে যাদের সম্পর্ক ভালো ছিল, এই মামলায় তাদেরকে টেনে টেনে নির্যাতন করা হয়েছে। মূলত ঘটনা হলো এটা। মানে বাবুল আক্তার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, বাবুল আক্তার খুন করাইছে... মানে আমি এগুলো জানি তা বলানোর জন্য।”
এহতেশামুল হক ভোলাকে ২০১৬ সালের ২৮ জুন তার সহযোগী মনির হোসেনসহ গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করার কথা জানিয়ে বলা হয়, সেটি দিয়ে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে।
ভোলাকে অস্ত্র ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আর মনিরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় অস্ত্র মামলায়। ২০২১ সালে জামিনে মুক্তি পান বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভোলা বলেন, “আমার কাছে কোন অস্ত্র পায়নি। কোন একটা লেবারের কাছে দেখাইছে। তারে বানাইছে আমার লেবার, ওরা শিখাই দিছে। তাকে ডিবির পাহাড়ে (লালদীঘি এলাকায় ডিবি কার্য়ালয়) এনে জিম্মি করে বলছে, অস্ত্র ভোলা দিছে বলবি, না হলে ক্রস ফায়ারে দিব।”
সন্ধ্যার পর বাবুল আক্তার কারাগার থেকে মুক্তি না পাওয়ায় ভোলা কারাগার এলাকা ত্যাগ করেন।
পুরনো খবর